দুই হাসপাতালে দুই ছবি
Kharagpur

অবশেষে শুরু অস্ত্রোপচার, রাশ ভর্তিতে

খড়্গপুর হাসপাতালের মহিলা ও পুরুষ মেডিক্যাল বিভাগ দু’টি খালি করা দেওয়া হয়েছে। গৃহ গপর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে এক চিকিৎসক ও ২২জন নার্সকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল ও খড়্গপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৩:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক হাসপাতালে সাত দিন পরে স্বস্তি। আর একটিতে নতুন করে উদ্বেগ।

Advertisement

এক সপ্তাহ পরে বৃহস্পতিবার থেকে ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শুরু হয়েছে অস্ত্রোপচার। আর খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী ও এক মহিলা রোগী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় খালি করে দেওয়া হয়েছে দু’টি বিভাগ।

ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সার্জারি বিভাগ। প্রসূতিদের ভর্তিতেও রাশ টানা হয়। সমস্যয় পড়েন রোগীরা। বুধবার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়দেব বর্মন ঘাটালে এসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানেই বৃহস্পতিবার থেকে সিজার-সহ যাবতীয় অস্ত্রোপচার শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালেও বহিবির্ভাগ-সহ অন্য পরিষেবা চালু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে ওটি চালু হয়ে গিয়েছে। রোগী ভর্তি স্বাভাবিক। বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালেও পরিষেবা সচল।”

Advertisement

ঘাটাল-দাসপুরে সংক্রমণ অবশ্য থেমে নেই। এ দিন নতুন করে আরও ৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উদ্বেগে রয়েছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটির চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, এক এক করে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক স্বাস্থ্যকর্মীর অমীমাংসিত রিপোর্ট আসছে। তাঁরা নিয়মিত হাসপাতালে আসছেন। পর্যাপ্ত মাস্কেরও সরবরাহ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সার্জারি বিভাগের এক চিকিৎসকের কথায়, “কেউ আক্রান্ত হলে তাঁর সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা কী ভাবে ডিউটি করবেন! নিয়ম মেনে তাঁদের আলাদা রাখা হচ্ছে না। আতঙ্ক নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে।”

খড়্গপুর শহরেও ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ। রেলশহরে এ বার একদিনে ৯জন সংক্রমিত হয়েছেন। বুধবার রাতে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী এবং নিমপুরার এক মহিলা রোগীর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। পুরুষ মেডিক্যাল বিভাগে ভর্তি ছিলেন ওই নিরাপত্তারক্ষী। আর গাঁটে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে দিন দু’য়েক আগে মহিলা মেডিক্যালে ভর্তি হন নিমপুরার ওই মহিলা। এর জেরে হাসপাতালের মহিলা ও পুরুষ মেডিক্যাল বিভাগ দু’টি খালি করা দেওয়া হয়েছে। গৃহ পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছে এক চিকিৎসক ও ২২জন নার্সকে। অধিকাংশ রোগীকেও ছুটি দেওয়া হয়েছে। অনেকে আবার আতঙ্কে ব্যক্তিগত বন্ডে হাসপাতাল ছেড়েছেন। হাসপাতাল বন্ধের আর্জি জানিয়েছে কর্মীরা। হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “হাসপাতাল বন্ধ রাখা যাবে না। জীবাণুমুক্ত করতে মহিলা মেডিক্যাল ও পুরুষ মেডিক্যাল খালি করেছি। ওই দুই বিভাগে ভর্তিতে রাশ টানা হচ্ছে। যে ক’জন রোগী আছেন, তাঁদের সার্জিক্যাল বিভাগে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।”

এর বাইরে রেলশহরে আরও ৭জন করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালে মৃত খড়্গপুরের ছত্তিসপাড়ার এক প্রসূতির করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় শঙ্কিত শহরবাসী। শহরে করোনায় মৃতের সংখ্যা সাতে পৌঁছেছে। আর সংক্রমিত ১২৭জন। নতুন করে আক্রান্ত ৭জনের মধ্যে ৬জনই রেলকর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্য। গোপালনগর, সাউথসাইড, সোনামুখি ও ঝাপেটাপুরে আক্রান্ত চারজন রেলের কন্ট্রোল বিভাগের কর্মী। চাঁদমারি রেল কলোনিতে আবার রেলকর্মীর পরিবারে মা ও মেয়ে করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন। আর পজিটিভ হয়েছেন সোমবার খড়্গপুরে আসা বিশাখাপত্তনমের এক কিশোরী। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “শহরে একদিনে ৯জন আক্রান্ত হয়েছেন। বিশাখাপত্তনমের কিশোরী এখন আর শহরে নেই। বাকি ৮জনের মধ্যে ৭জনই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। একজনকে করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement