রাখিতে সুস্থ থাকার বার্তা। মেদিনীপুর শহরের ছোটবাজারে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
এ বার ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে রাখি-বন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করছেন শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা। শেষ মুহূর্তে কিছু বদল না হলে আজ, সোমবার মূল অনুষ্ঠানটি ঝাড়গ্রাম শহরের কলেজ মোড়ে হওয়ার কথা। এ ছাড়া জেলার লোধাশুলি, জামবনি, রোহিণী, নয়াগ্রাম মতো বিভিন্ন এলাকাতেও শুভেন্দু-অনুগামীরা রাখি-বন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। প্রতিটি কর্মসূচিতে অনুগামীরা গলায় শুভেন্দুর ছবি ঝুলিয়ে পথচলতি মানুষজনের হাতে রাখি পরাবেন।
শুভেন্দু অনুগামীরা জানিয়েছেন, পথচলতি লোকজনের হাত স্যানিটাইজ়ার দিয়ে পরিষ্কার করে তারপরে রাখি পরিয়ে দেওয়া হবে। যাঁদের রাখি পরানো হবে তাঁদের দেওয়া হবে একটি করে মাস্ক। ইচ্ছুকদের মিষ্টিমুখ করানোরও আয়োজন থাকছে। তবে ওই সব কর্মসূচিতে দলের কোনও পতাকা থাকবে না। ওই কর্মসূচির জন্য দশহাজার রাখি কেনা হয়েছে। এই কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন কৃষি দফতরের কর্মী স্নেহাশিস ভকত, সাঁকরাইল ব্লকের রোহিণী ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান সুমিত চন্দ, ঝাড়গ্রামের তৃণমূল কর্মী সুমন দাস, টিএমসিপি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি রথীন মণ্ডল, জামবনির কর্মী শান্তনু মাহাতো, কবি মাহাতো, ঝাড়গ্রাম পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সিদ্ধার্থ দুবের মতো শুভেন্দুর একনিষ্ঠ অনুগামীরা।
শুভেন্দুর অনুগামী সিদ্ধার্থ, রথীনেরা বলছেন, ‘‘আমরা দাদার সৈনিক। আমাদের হারানোর কিছুই নেই। দাদার সঙ্গে ছিলাম, দাদার সঙ্গে আছি, আগামী দিনেও দাদার সঙ্গে থাকব।’’ কেন এই কর্মসূচি? অনুগামীদের বক্তব্য, ‘‘দাদা সব সময় জঙ্গলমহলের মানুষের পাশে থাকেন। সামাজিক নানা কর্মসূচিতেও তিনি ঝাড়গ্রামে আসেন। তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে আমরা সাধারণ মানুষকে এই বিশেষ দিনটিতে সৌহার্দ্যের বন্ধনে বাঁধতে চাই।’’
প্রতি বছর জেলার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল ও তার শাখা সংগঠনগুলির উদ্যোগে রাখি বন্ধন কর্মসূচি হয়। তবে এই প্রথমবার পৃথকভাবে শুভেন্দু অনুগামীরা অরাজনৈতিক রাখি-বন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। জঙ্গলমহলের সাংগঠনিক দায়িত্বে শুভেন্দুকে ফেরাননি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভে সরব হন শুভেন্দুর অনুগামীরা। কয়েকদিন আগে জামবনি ব্লকের চারিচাকা গ্রামে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এক আদিবাসী ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে শুভেন্দুর পাঠানো একাদশ-দ্বাদশ শাখার বই তুলে দেন তাঁর অনুগামীরা। ওই দিন অনুগামীরা শুভেন্দুর ছবি গলায় ঝুলিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন। অনুগামীরা জানান, রাখিবন্ধন কর্মসূচিতেও তাঁরা শুভেন্দুর ছবি গলায় ঝুলিয়ে রাখবেন।
শাসকদলের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ দেখে রাজনৈতিক মহলের অনুমান, শুভেন্দু দলের কর্মসূচি থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন। পাশাপাশি, নিজে এবং অনুগামীদের মাধ্যমে সামাজিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। কয়েকদিন আগে কলকাতায় তৃণমূল ভবনে দলের সমন্বয় কমিটির বৈঠকে গরহাজির ছিলেন শুভেন্দু। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘সোমবার জেলা জুড়ে দলের নেতা-কর্মীরা দলীয় পতাকা-ব্যানার নিয়ে রাখি-বন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। দলের কর্মীদের অরাজনৈতিক পৃথক কর্মসূচির কথা জানা নেই।’’