নিজের দোকানে বিশ্বনাথ।
সরকারি ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। ডিলারও নিযুক্তকরণ কাজ শেষ। কিন্তু দেখা নেই সরকারির আধিকারিকের। তাই ঘোষণার এক সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গেলেও পাঁশকুড়া ব্লকে শুরু হয়নি ভর্তুকিযুক্ত বীজ ধান বিক্রি।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভর্তুকিযুক্ত বীজ ধান বিক্রি করে রাজ্য সরকার। এ বছর ২৫ নভেন্বর থেকে ধান বিক্রির দিন স্থির হয়। সেই মতো পাঁশকুড়া ব্লকে ডিলার নিযুক্ত হন বিশ্বনাথ সামন্ত। তিনি জানাচ্ছেন, ধান বিক্রির মাস্টাররোলের কাজ এবং কৃষকদের নথির যাচাইয়ের কোনও সরকারি আধিকারিক এখনও তাঁর দোকানে আসেননি। ফলে বীজ ধানও বিক্রির হচ্ছে। বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কৃষি দফতরের কোনও প্রতিনিধি আমার কাছে আসেননি। মাস্টাররোলের কাজ তো আর আমরা করতে পারব না। তাই বীজধান মজুদ থাকলেও সেগুলি চাষিকে ভর্তুকির বীজ হিসাবে বিক্রি করা যাচ্ছে না।’’
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ডিলারের কাছ থেকে বীজ ধান কিনতে কৃষককে নিয়ে যেতে হবে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, জমির প্রমাণ পত্র ও ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের প্রথম পাতার প্রতিলিপি। ধান কেনার পর সেই ক্যাশমেমো দেখিয়ে সই করতে হবে নির্দিষ্ট মাস্টাররোলে। ওই কাজের জন্য ডিলারের কাছে থাকবেন সরকারের কোনও না কোনও প্রতিনিধি। কিন্তু সেই প্রতিনিধিরই দেখা নেই পাঁশকুড়া ব্লকে। অগত্যা চড়া দামে বাজার থেকেই বোরো মরসুমের ধানের বীজ কিনতে শুরু করেছেন চাষিরা। এর ফলে ভর্তুকিযুক্ত বীজ ধান বিক্রি নিয়ে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পাঁশকুড়ার কৃষকেরা।
মাইশোরার পাতন্দা গ্রামের কৃষক রঞ্জিত মান্না বলেন, ‘‘শুনেছিলাম বীজ ধানে ছাড় দেবে সরকার। জেলার প্রায় সমস্ত ব্লকেই শুরু হলেও এখানে তো এখনও পর্যন্ত সেই ধান বিক্রিই শুরু হয়নি। বাজার থেকে বেশি দাম দিয়েই বীজ ধান কিনতে বাধ্য হলাম।’’ উল্লেখ্য, ১০ বছরের কম সময়ের উচ্চফলনশীল ধানের জন্য কিলোগ্রাম প্রতি ২০ টাকা করে ভর্তুকি মিলবে। ১০ বছরের বেশি পুরনো ধানের বীজ বেছে নিলে ভর্তুকির পরিমাণ ১০ টাকা। শঙ্কর বীজের জন্য ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মিলবে।
কেন এখনও পাঁশকুড়ায় ভর্তুকির বীজ ধান বিক্রি শুরু হয়নি? তমলুক মহকুমার কৃষি দফতরের-সহ কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরার জবাব, ‘‘বুলবুলের ক্ষতিপূরণের কাজের চাপ এসে পড়ায় ওখানে কোনও প্রতিনিধি পাঠানো সম্ভব হয়নি। আগামিকাল থেকে পাঁশকুড়া ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলারের কাছে একজন প্রতিনিধি যাবেন এবং ভর্তুকির বীজধান বিক্রি শুরু হবে।’’