Daspur

চুরি দরজা, জানলাও

নাড়াজোল রাজবাড়ির সম্পত্তি বেহাত হচ্ছে।শুধু জলহরি নয়, নাড়াজোল রাজবাড়ির বহু স্থাপত্য নিদর্শনই হারিয়ে যাচ্ছে। চুরি হচ্ছে দরজা-জানলা। দখল হয়ে যাচ্ছে একরের পর একর ফাঁকা জমি-জলাশয়।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

দাসপুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২০ ০১:৩৭
Share:

ক্রমশ বেদখল হয়ে যাচ্ছে রাজবাড়ির জমি। নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ অধিগ্রহণ করেছে। জেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ নজরদারি রয়েছে। এলাকাটিকে পযর্টন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতেও উদ্যোগী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তা-ও রোখা যাচ্ছে না পুকুর চুরি!

Advertisement

শুধু জলহরি নয়, নাড়াজোল রাজবাড়ির বহু স্থাপত্য নিদর্শনই হারিয়ে যাচ্ছে। চুরি হচ্ছে দরজা-জানলা। দখল হয়ে যাচ্ছে একরের পর একর ফাঁকা জমি-জলাশয়। স্থানীয়দের প্রশ্ন, নাড়াজোল রাজ পরিবারের যাবতীয় পুরাকীর্তি টিকিয়ে রাখতে যেখানে এত উদ্যোগ, সেখানে কী করে এই জবর দখল হচ্ছে!

৫৭০ বছর ধরে রাজত্ব করেছিল নাড়াজোলের রাজ পরিবার। দেশের স্বার্থে অগ্রণী ভূমিকা ছিল পরিবারের। মহাত্মা গাঁধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো বহু গুণিজনের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে রাজ পরিবারের সঙ্গে। এখনও সেখানে বহু পুরনো স্থাপত্য শৈলী রয়েছে। রয়েছে কয়েকশো একর জমি, একাধিক পুকুর ও অন্য সম্পদও। ২০০৮ সালে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ এগুলি রক্ষা করতে এগিয়ে আসে। এখন নাড়াজোল রাজ বাড়ির যাবতীয় সম্পত্তির মালিক জেলা প্রশাসন।

Advertisement

ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়ক ঘেঁষা নাড়াজোল মৌজায় রাজবাড়ি লাগোয়া কয়েক একর ফাঁকা জমি রয়েছে। সেই জমি ধীরে ধীরে জবর দখল হচ্ছে। ব্যাক্তিগত ভাবে দখল করে মাথা তুলছে বড় বাড়ি, দোকানঘর, বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে পুকুর। স্থানীয়দের একাংশ জানালেন, বাম আমল থেকেই নাড়াজোল রাজাদের জমি দখল হতে শুরু করে। এখনও শাসক দলের নেতাদের একাংশ জমি দখলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তাঁদের প্রশ্রয়েই দখল হচ্ছে অধুনা সরকারি ওই সব জমি। নাড়াজোল বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, “খাস জমির মালিক তো স্থানীয় নেতারা। তাঁরা চাইলেই জমি মিলবে। জমি যাঁরা নিচ্ছেন তাঁরা টাকা খরচ করছেন। কিন্তু কাগজ পাচ্ছেন না। তবে একবার জমি দখল করে বসে গেলে তো আর কেউ তুলতে পারবে না। কাগজ নিয়েই আর কী হবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, “বাজার লাগোয়া এলাকায় আধ কাঠা জমি নিলে তিন লাখ টাকা পার্টি অফিসে দিয়ে আসতে হবে।”

নাড়াজোল রাজ পরিবারের সদস্য তথা নাড়াজোল পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির সম্পাদক সন্দীপ খানও বলছিলেন, “জমির অপব্যবহার বন্ধে বহুবার জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু জবর দখল বন্ধ হচ্ছে না।” নাড়াজোলেই বাড়ি দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার। এলাকার দায়িত্বে বিধায়কের ছেলে কুমারেশ ভুঁইয়া। জবর দখল প্রসঙ্গে কুমারেশের বক্তব্য, “ যা জমি দখল হয়েছে সবই বামফ্রন্টের আমলে। আমাদের আমলে জবর দখল সব বন্ধ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement