ক্ষীরপাই শহরে পরিযায়ী পাখি। নিজস্ব চিত্র
কেবল আর হরিসিংহপুরের ঝিলই নয়, ক্ষীরপাই, দাসপুর-সহ ঘাটালের বিভিন্ন জলাশয় এখন পরিযায়ী পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়। শীত পড়তেই হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি ঘাটালে এসে ঘাঁটি গেড়েছে। পরিযায়ীদের উপর শিকারীদের অত্যাচার বন্ধ করতে আগে থেকেই তৎপর বন দফতর। মাইক হেঁকে সকলকে সচেতন করছেন দফতরের কর্মীরা। রাস্তায় নেমে প্রচার করছে পক্ষীপ্রেমী ও পরিবেশ কর্মীরাও।
ঘাটাল পরিযায়ী পাখিদের পুরনো ঠিকানা। বছর দশ-বারো ধরেই ঘাটাল শহর লাগোয়া হরিসিংহপুর পার্কের ঝিলে এসে আস্তানা করছে পরিযায়ীরা। এখানেই থেমে থাকেনি পরিযায়ীরা। বেশ কয়েক বছর ধরেই ক্ষীরপাই পুরসভার মরা পুকুর ও চাদড়া পুকুরেও চলে আসছে তারা। এ বারও ক্ষীরপাই পুর-এলাকার ওই দু’টি জলাশয়ে কয়েক হাজার পরিযায়ী পাখি ভিড় করেছে। একই সঙ্গে আবার দাসপুরের ভগবতীপুর এলাকার এক বড় পুকুরকে তারা আস্তানা বানিয়ে নিয়েছে। শীতের এই আগন্তুকদের দেখার জন্য অনেকেই অপেক্ষা করে থাকেন। মুখিয়ে থাকেন পক্ষীপ্রেমীরা। পাখি শিকারীরাও। পাখি শিকারীদের রুখতে এ বার প্রথম থেকে সতর্ক জলাশয় লাগোয়া বাসিন্দারাও।
বন দফতর সূত্রে খবর, দুপুর ১২টা পর্যন্ত জলাশয়গুলিতে থাকে পাখির দল। দুপুরের পর এক এক করে জলাশয় ছেড়ে তারা খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায় অন্যত্র। জলাশয়গুলি তাদের কাছে নিরাপদ আশ্রয় হলেও, সেখানে নেই পর্যাপ্ত খাবার। পক্ষীপ্রেমী সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এ বার এখনও পিকনিকের মরসুম শুরু হয়নি। ডিজে-বক্সেরও দাপট নেই। কিন্তু পাখি শিকারীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হরিসিংহপুরের ঝিল থেকে ক্ষীরপাই-ভগবতিপুর জলাশয়গুলিতে তাই তৎপর পক্ষীপ্রেমী সংগঠনগুলিও। দাসপুরের পক্ষীপ্রেমী এক সংগঠন তথা পরিবেশকর্মী প্রদীপ কর, আসরাফুল মল্লিকরা বলেন, “জলাশয় লাগোয়া জায়গায় সচেতনমূলক পোস্টার দেওয়া হয়েছে। পাখি শিকারীদের খবর পেলেই যেন পুলিশ ও বন দফতরের খবর দেওয়া হয়। তা ছাড়া আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এলাকায় গিয়ে নজরদারি চালাচ্ছেন।” ঘাটাল মহকুমার রেঞ্জার বিশ্বনাথ মুদিকরা বলেন, “পরিযায়ী পাখিদের রক্ষা করতে বন দফতর সক্রিয়া। মাইক হেঁকে প্রচার করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।”