ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘পিএম কিসান’ প্রকল্পে আর্থিক সাহায্য পেতে জেলার কৃষকদের তথ্য যাচাই শুরু হয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনের আগে। প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে অনলাইনে আবেদনকারী কৃষকদের তথ্য যাচাই করে জমা দিয়েছিল রাজ্যের কৃষি দফতর। ভোটের পর ওই প্রকল্পে জেলার প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার কৃষক প্রথম দফার অর্থ সাহায্য পেয়েছেন। প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার উপযুক্ত বাকি কৃষকদের তথ্য যাচাই শুরু করেছে কৃষি দফতর। এর জন্য ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তদের মোবাইলে ‘মেসেজ’ করে প্রয়োজনীয় নথি সহ ব্লক কৃষি দফতরে ডাকা হচ্ছে।
জেলা কৃষি দফতরের সহ-আধিকর্তা (প্রশাসন) আশুতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘পিএম কিসানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য উপযুক্ত কৃষকদের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ কৃষকদের ডাকা হচ্ছে।’’
রাজ্য ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প চালু করেছিল কয়েক বছর আগে। প্রকল্পে আগে কৃষকদের বছরে দু’দফায় বার্ষিক ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হত। চলতি বছর থেকে তা বাড়িয়ে বার্ষিক ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা হয়েছে। ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি বা ‘পিএম কিসান’ প্রকল্প চালু হয়েছে। ওই প্রকল্পে তিন দফায় মিলিয়ে বছরে মোট ৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তবে এ রাজ্যে ‘পিএম কিসান’ প্রকল্প চালু নিয়ে রাজ্য সরকার সাহায্য করছে না বলে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। এনিয়ে রাজনৈতিক চাপান উতোরের মাঝে বিধানসভা ভোটের আগে ‘পিএম কিসান’ প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদনকারী কৃষকদের তথ্য যাচাই শুরু করে রাজ্য কৃষি দফতর। ওই প্রকল্পে পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় ২ লক্ষ ৩৪ হাজার আবেদন যাচাই শুরু হয়েছিল। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বিধানসভার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর আগে পর্যন্ত নথিপত্র যাচাই করে জেলার প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার কৃষকের আবেদন ‘পিএম কিসান’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। মে মাসে ভোট মিটে যাওয়ার পরে ওই কৃষকেরা প্রথম দু’দফা মিলিয়ে ৪ হাজার টাকা পেয়েছেন। পিএম কিসানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার উপযুক্ত জেলার বাকি কৃষকদের তথ্য যাচাই শুরু হয়েছে। ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের আওতাভুক্ত কৃষকদের বিভিন্ন তথ্য কৃষি দফতরের পোর্টালে রয়েছে। জেলায় কৃষকবন্ধু প্রকল্পে প্রায় ৯ লক্ষ কৃষক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে ‘কৃষকবন্ধু’র থেকে ‘পিএম কিসান’ প্রকল্পের নিয়ম কিছুটা আলাদা। যেমন, সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পিএম কিসানের সুবিধা পাবেন না। যাঁরা কর দেন এবং পেনশন প্রাপকেরাও এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। একটি কৃষক পরিবারের একজনই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। আধারের তথ্য জমা বাধ্যতামূলক। সেজন্য ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের যাঁরা ‘পিএম কিসান’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার উপযুক্ত তাঁদের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। তার জন্য কৃষকদের মোবাইলে মেসেজ করে জমির নথি, আধার কার্ড, ভোটার পরিচয়পত্র, ব্যাঙ্কের পাশ বুক সহ ব্লক কৃষি দফতরে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।