ভিড়হীন মেলা। নিজস্ব চিত্র
কয়েক দিন আগে জেলা লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি এবং যাত্রা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল নন্দকুমার হাইস্কুল ময়দানে। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর আয়োজিত তিনদিনের ওই উৎসব শেষের পরে একই জায়গায় সোমবার থেকে শুরু হয়েছে জেলা ‘সৃষ্টিশ্রী’ মেলা। জেলা ‘আনন্দধারা’ দফতর আয়োজিত ওই মেলায় বিভিন্ন স্বসহায়ক গোষ্ঠীর উৎপাদিত শিল্পসামগ্রীর প্রদর্শন ও বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য মেলায় ৩৩টি স্টল স্বসহায়ক গোষ্ঠীকে বণ্টন করা হয়েছে। অভিযোগ, মেলায় লোকজনের ভিড় না থাকায় ব্যবসার অভাবে স্টল ছাড়লেন একাধিক স্বসহায়ক গোষ্ঠী।
সোমবার সন্ধ্যায় মেলার উদ্বোধন করেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী। অনুষ্ঠানে নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক সহ দফতরের কর্তারা হাজির ছিলেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলার কথা। কিন্তু উদ্বোধনের দিন অধিকাংশ স্টলে বিভিন্ন ব্লকের স্বসহায়ক গোষ্ঠী তাদের উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির জন্য রাখলেও ঠিক পরের দিন থেকে অধিকাংশ ‘স্টল’ খালি রয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১০ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি জেলা লোকসংস্কৃতি, আদিবাসী সংস্কৃতি ও যাত্রা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল এই ময়দানে। প্রচুর মানুষের ভিড় হয়েছিল। তারপর একই মাঠে ‘সৃষ্টিশ্রী’ মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভিড় একেবারেই ছিল না। প্রথম দিন থেকেই মেলায় ভিড় নেই বললেই চলে। মঙ্গলবার মেলার দ্বিতীয় দিনেও প্রায় অর্ধেক ‘স্টল’ ফাঁকা ছিল। বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তও দেখা গিয়েছে একই ছবি। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি দফতর ও ব্লক প্রশাসনের সহযোগিতায় আয়োজিত জেলাস্তরের এমন গুরুত্বপূর্ণ মেলায় বিভিন্ন ব্লকের স্বহায়ক গোষ্ঠীগুলি যোগ দেওয়ার পরেও শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকলেন না কেন?
মেলায় যোগ দেওয়া স্বসহায়ক গোষ্ঠীগুলির একাংশের অভিযোগ, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হলেও মেলায় চূড়ান্ত অব্যবস্থা চলছে। মেলা নিয়ে প্রচারের অভাবের কারণেই লোকজনের ভিড় হয়নি। অধিকাংশ স্টলে ক্রেতার দেখা নেই। বিভিন্ন রকম সামগ্রী নিয়ে এসেও বিক্রি না হওয়ায় অনেক স্বসহায়ক গোষ্ঠী মেলা ছেড়ে চলে গিয়েছে। মেলায় স্টল দেওয়া এক স্বসহায়ক গোষ্ঠীর সভানেত্রী বলেন, ‘‘ভাল বিক্রি হবে এই আশা নিয়ে মেলায় নিজেদের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী এনেছিলাম। কিন্তু মেলায় লোকজনের ভিড় নেই বললেই চলে। ফলে বিক্রিও হয়নি। আমরা খুবই হতাশ হয়েছি।’’
মেলা আয়োজনের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে নন্দকুমার ব্লক প্রশাসন। মেলায় ভিড় না থাকা এবং মেলা শেষের আগেই স্বসহায়ক গোষ্ঠীগুলির একাংশের মেলা ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে নন্দকুমারের বিডিও শানু বক্সী বলেন, ‘‘ওই ময়দানে পরপর দু’টি বড় উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকায় হয়তো লোক কিছুটা কম হয়েছে। তবে স্বসহায়ক গোষ্ঠীর একাংশের মেলার স্টল ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়টিঠিক নয়।’’