প্রতীকী ছবি।
কোনওটায় ৭০ থেকে ২০ কমিয়ে করা হচ্ছে ৫০, কোনওটায় ৮০ থেকে নম্বর নামানো হচ্ছে ৫০’এ। টেস্ট পরীক্ষার আগে নতুন নির্দেশিকা মানতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে অনেক স্কুলকেই। প্রশ্নের নম্বর বিভাজন ঠিক করতে রীতিমতো ক্যালকুলেটর নিয়ে বসতে হচ্ছে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের। গড়বেতার তিনটি ব্লক এলাকার অনেক স্কুলকেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ঠিক করতে নাজেহাল হতে হচ্ছে।
গোয়ালতোড়, গড়বেতার একাধিক স্কুলকে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়ে দিয়েছে, যে সব থিয়োরি বিষয়ের পূর্ণমান ৭০ বা ৮০, সে সব বিষয়ের টেস্ট হবে ৫০ নম্বরের। এতেই চিন্তায় পড়েছে অনেক স্কুল। কোনও স্কুল নির্দেশিকা পাওয়ার আগের থেকেই টেস্টের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্নপত্রের খসড়া করে ছাপাখানায় পাঠিয়ে দিয়েছিল, কোনও স্কুলে হাতে লেখা প্রশ্নপত্র সম্পূর্ণ করে ফাইল-বন্দি হয়ে গিয়েছিল। ফলে সেই সব স্কুলগুলিকে ৭০ এবং ৮০ নম্বরের প্রশ্নপত্রগুলিকে কেটে সংসদের নির্দেশ অনুযায়ী ৫০ নম্বরের করতে হচ্ছে। এমনকি ছাপাখানায় চলে যাওয়া প্রশ্নপত্র ফেরতও আনতে হচ্ছে স্কুলকে। যেমন, টেস্ট পরীক্ষা নেওয়ার জন্য উচ্চ মাধ্যমিকের থিয়োরির প্র্যাকটিক্যাল ও নন- প্র্যাকটিক্যাল বিষয়ের ৭০ ও ৮০ নম্বরের প্রশ্নপত্র করে ছাপাখানায় ছাপতে পাঠিয়ে দিয়েছিল গোয়ালতোড়ের কিয়ামাচা হাইস্কুল। নতুন নির্দেশিকা আসার পর সেই প্রশ্নপত্র ছাপাখানা থেকে ফেরত আনতে হচ্ছে স্কুলকে। প্রধান শিক্ষক অনুপকুমার পড়িয়া বলেন, ‘‘নির্দেশ পাওয়ার আগেই টেস্টের প্রশ্নপত্র প্রেসে ছাপতে চলে গিয়েছিল, সেগুলি ফেরত আনছি।’’
একই সমস্যায় পড়েছে হুমগড় বালিকা বিদ্যালয়। টেস্টের জন্য উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ঠিক করে ছাপার জন্য ছাপাখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ডিটিপি-ও অনেকটা হয়ে গিয়েছিল। নতুন নির্দেশ আসায় ছাপাখানা থেকে প্রশ্নপত্রের ফাইল আনতে হচ্ছে স্কুলকে। প্রধান শিক্ষিকা কোয়েলিয়া দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রশ্নপত্র ছাপার কাজ অনেকটা এগিয়ে যাওয়ায় প্রেস থেকে ফাইল দিতে আপত্তি করছিল, পরে প্রশ্নপত্রের নম্বর কমিয়ে ৫০ করে দেওয়া হচ্ছে।’’ গোয়ালতোড়ের ধামচা ছাগুলিয়া সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলের দর্শনের শিক্ষক বিপ্লব মাহাতো বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্টের জন্য দর্শনের প্রশ্নপত্রের খসড়া সম্পূর্ণ করে জেরক্সের জন্য ফাইল-বন্দি করে রেখেছিলাম।’’
গড়বেতার ব্যানার্জিডাঙা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদ্যোত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রশ্নপত্রের নম্বর বিভাজন ৭০-৮০ থেকে ৫০ করতে একটু অসুবিধা তো হচ্ছেই।’’ চন্দ্রকোনা রোডের সারদাময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্দেশ মেনে প্রশ্নপত্র করতে অসুবিধা হচ্ছে না।’’ এই ব্লকেরই অন্য একটি স্কুলের পদার্থবিদ্যার এক শিক্ষক বলেন, ‘‘৭০-৮০ থেকে নম্বর কেটে ৫০ করতে বাড়তি খাটতে হচ্ছে। প্রশ্নের ধাঁচও বদলাতে হচ্ছে।’’ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্তা বলেন, ‘‘সংসদের নির্দেশিকা স্কুলগুলিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’