প্রতীকী ছবি।
চাষিদের মতো মৎস্যজীবীদেরও কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে থেকেই বিভিন্ন খটিতে মৎস্যজীবীদের কিসান ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন শুরু হয়েছে।
কিন্তু এই কার্ডের মাধ্যমে মৎস্যজীবীরা কত টাকা ঋণ পাবেন, আবেদনের যোগ্যতা এবং পদ্ধতি কী, এখনও পর্যন্ত সে বিষয়ে মৎস্য দফতর থেকে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। একে বিভ্রান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মৎস্যজীবী থেকে বিভিন্ন মৎস্যজীবী সংগঠন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার জন্য মৎস্য দফতরের কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানাল কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী ইউনিয়ন।
গত বছর সামুদ্রিক মাছের খরা ছিল। দীর্ঘ কয়েক মাসের লকডাউন কাটিয়ে এবছর সামুদ্রিক মাছ বেশি পরিমাণে ধরা পড়বে বলে আশা করেছিলেন মৎস্যজীবীরা। সেই সম্ভাবনাও বর্তমানে ক্ষীণ। এই অবস্থায় মৎস্যজীবীরা ব্যবসা চালানোর জন্য যাতে সহজে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পান সে জন্য তাঁদের কিসান ক্রেডিট কার্ড দিতে উদ্যোগী হয় মৎস্য দফতর।
ইতিমধ্যে রামনগর-১ ও ২, কাঁথি-১, খেজুরি-২ ব্লকের বিভিন্ন খটিতে কিসান ক্রেডিট কার্ডের জন্য মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে আবেদন সংগ্রহ শুরু হয়েছে বলে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। কাঁথি মহকুমা মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি লক্ষীনারায়ণ জানা বলেন, ‘‘মৎস্যজীবীদের যাতে মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিতে না হয় সে জন্য তাঁদের কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে। তারপরে তাঁরা সরকারের ঘোষিত নীতি অনুযায়ী ব্যাঙ্ক থেকে ব্যবসার জন্য ঋণ নিতে পারবেন।’’
যদিও বিভিন্ন খটিতে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে কিসান ক্রেডিট কার্ডের আবেদন সংগ্রহ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেই দাবি মৎস্যজীবী সংগঠনের। কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী ইউনিয়নের সভাপতি তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‘খটি মৎস্যজীবীরা আবেদনপত্র কোথা থেকে সংগ্রহ করবেন এবং কোথায় জমা দেবেন, সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না। মৎস্য দফতরও মৎস্যজীবী সংগঠনগুলিকে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি। তাছাড়া সরকারিভাবে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়নি।’’ ইতিমধ্যে ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে সহ মৎস্য অধিকর্তার কাছে সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে কিসান ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য কী পদ্ধতি রয়েছে, আবেদনের যোগ্যতা-সহ পুরো স্কিমের সম্পূর্ণ তথ্য জানানোর দাবি জানানো হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও তা সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনুমোদন পায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলায় বেশ কিছু ব্লকে কার্ড বিলির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায বিভ্রান্তিতে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। এই বিষয়ে সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী বলেন, ‘‘আগে মৎস্যজীবীদের কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে। তারপর ওই কার্ডের মাধ্যমে মৎস্যজীবীরা কী ভাবে এবং কতটা ঋণ পাবেন সে সম্পর্কে স্কিম চালু করবে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই।’’