এমনই কামরা দেখা যাবে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসে। নিজস্ব চিত্র
করোনা-কালে পর্যটন কেন্দ্রের বিধি-নিষেধ এখনও শিথিল হয়নি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় সৈকত শহর দিঘার সফর যাতে আরামদায়ক হয়, সেই পদক্ষেপ করল রেল। আজ, মঙ্গলবার থেকেই দিঘাগামী তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসে দেখা যাবে বিশেষ বগি। এই আরামদায়ক কামরা সাধারণত রাজধানী এবং তেজস এক্সপ্রেসে ব্যবহার করা হয়।
রেল সূত্রের খবর, আজ, মঙ্গলবার থেকে আপ এবং ডাউন হাওড়া-দিঘা তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসে যুক্ত হবে ‘লিঙ্ক হফম্যান বুশ’ (এলএইচবি) বগি। আজ থেকে একই সুবিধা মিলবে আপ ও ডাউন হাওড়া-রাঁচি এক্সপ্রেসেও। আর সোমবার থেকে এই বিশেষ বগি যুক্ত হয়েছে হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেসে। জানা যাচ্ছে, জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি এলএইচবি বগি অনেক বেশি আরামদায়ক এবং সুরক্ষিত। সম্প্রতি উন্নতমানের এই এলএইচবি বগি তৈরি শুরু হয়েছে ভারতেই। সেগুলি প্রথমে তেজস এক্সপ্রেসে ব্যবহার করা হয়েছিল। রাজধানী এক্সপ্রেসেও এখন একটি করে এই কামরা ব্যবহার হচ্ছে। রেলের যা পরিকল্পনা, তাতে আগামী দিনে সব রাজধানী এক্সপ্রেসই চলবে তেজসের এই বগি দিয়ে। এ ছাড়া, দেশে অনেক দূরপাল্লার ট্রেনে ব্যবহৃত পুরনো ‘ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি’ (আইসিএফ) বগি সরিয়েও এলএইচবি বগি আনা হবে বলে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। সেই তালিকাতেই রয়েছে তাম্রলিপ্ত-সহ বাংলার ছ’টি এক্সপ্রেস ট্রেন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কে এস আনন্দ বলেন, ‘‘রাজ্যে মোট ছ’টি দূরপাল্লার ট্রেনে এলএইচবি বগি যুক্ত হচ্ছে। এতে দিঘার পাশাপাশি অন্য রুটগুলিতেও পর্যটক এবং যাত্রীরা যাতায়াতে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন।’’ উল্লেখ্য, বর্তমানে আইসিএফ বগি নিয়ে নিয়মিত সকাল-বিকাল দিঘা ছুটছে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস। ট্রেনটি হাওড়া থেকে সকালে সাড়ে ৬টা এবং দিঘা থেকে সকাল ১১টায় ছাড়ে।
দিঘা অবশ্য এখন শুনশান। করোনার বাড়বাড়ন্তে দিঘা, মন্দারমণি-সহ রাজ্যের সব পর্যটন কেন্দ্রই এ বছরের গোড়ায় পুরোপুরি বন্ধ করেছিল রাজ্য সরকার। পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন জানায়, ৫০ শতাংশ পর্যটক এবং কর্মী রেখে হোটেল চালানো যাবে। তবে সমুদ্রস্নানে এখনও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এলাকার দর্শনীয় স্থানগুলিও বন্ধ। ফলে ২৩ থেকে ২৬ জানুয়ারির ছুটির মধ্যে সপ্তাহান্তের ছুটি জুড়লেও এ বছর সৈকত শহরগুলি প্রায় পর্যটক শূন্য। তবে এরই মধ্যে তবে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে রেল কর্তৃপক্ষ যে পদক্ষেপ করছেন তাতে আশাবাদী দিঘার হোটেল মালিকেরা।
দিঘার হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘আগে শুধুমাত্র রাজধানী এক্সপ্রেসে চেপে যাত্রীরা যে আনন্দ পেতেন, এ বার দিঘা আসতেই সেই সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নতুন বগিতে পর্যটকের সংখ্যা আগের তুলনায় বাড়বে বলেই মনে হয়।’’