কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সৌমেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
দিঘা-নন্দকুমার ১১৬ বি জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ করা হবে। দুই লেন বিশিষ্ট জাতীয় সড়ক তৈরিতে অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর জন্য ৮১২ কোটি টাকা রাজ্য সরকারকে পাঠানো হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি টুইট করে এ কথা জানানোর পরেই তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জেলার বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারী। যাঁকে গত কয়েকদিনে রাজ্য সরকারের মন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতৃত্বকে একাধিক কারণে আইনি নোটিস পাঠাতে দেখা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রী টুইট করেছেন, ‘১১৬বি জাতীয় সড়ক দুই লেনের করা হবে। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ৮১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’ উল্লেখ্য, নন্দকুমার থেকে দিঘা হয়ে ওড়িশার চন্দনেশ্বর পর্যন্ত বিস্তৃত ১১৬বি জাতীয় সড়ক। রাস্তাটি শুধু এ রাজ্যেই রয়েছে ৯১ কিলোমিটার। ২০১৮ সালে এই জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরকে (জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ)। নন্দকুমার থেকে কাঁথি হয়ে পিছাবনি পর্যন্ত জাতীয় সড়ক নির্মাণ কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। তবে, পর্যাপ্ত জমি না মেলায় পিছাবনি থেকে দিঘা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ সম্ভব হচ্ছিল না। ইতিমধ্যে, পিছাবনি থেকে দিঘা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। পরে রাজ্য সরকারের তরফে কোন কোন মৌজায় জমি নেওয়া হবে, সেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে জমি মালিকদের ডেকে শুনানি শেষ হয়েছে।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, দিঘা থেকে পিছাবনি পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ করতে চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। সেই অনুযায়ী রামনগরের চাউলখোলা থেকে দিঘার আগে অলঙ্কারপুর পর্যন্ত নতুন বাইপাস করার প্রস্তাব পাঠানো হয়। মূলত চাউলখোলা থেকে বিক্ষিপ্তভাবে একটি রাস্তা বালিসাই পর্যন্ত এবং পরে বালিসাই থেকে ঠিকরা মোড় পর্যন্ত সম্পূর্ণ বাইপাস নির্মাণ করা হবে। এ প্রসঙ্গে ১১৬ বি জাতীয় সড়ক নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ত দফতরের (জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ) এগজ়কিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রলয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য একটি প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সেই হিসাবে ৮১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার অনুমোদন মিলেছে। খুব শীঘ্রই জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজ শুরু করা হবে।’’
রাস্তা সম্প্রসারণ হলে দিঘা সহ পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলির যেমন আরও গুরুত্ব বাড়বে, তেমনই ১১৬বি জাতীয় সড়ক ধরে ওড়িশা হয়ে চেন্নাই, তামিলনাড়ুর সঙ্গে এ রাজ্যের পণ্য পরিবহন অনেকটা সহজ হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। ১১৬বি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ বরাদ্দ করার প্রসঙ্গ তুলে বৃহস্পতিবার ফেসবুকে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাই। জাতীয় সড়ক দুই লেন বিশিষ্ট তৈরি হলে যানবাহনের গতি বাড়বে। যাত্রীরা সুরক্ষিত থাকবে। কলকাতা-সহ গোটা পূর্ব ভারতের পর্যটকদের দিঘা বেড়াতে আসা আরো সহজ এবং সুবিধাজনক হয়ে উঠবে।’’
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী শশী পাঁজাকে আইনি নোটিস পাঠিয়ে গত কয়েক দিনে খবরের চর্চায় রয়েছেন। এর মধ্যে তাঁর ফেসবুকের প্রশংসা পোস্ট দেখে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের কটাক্ষ, ‘‘১১৬বি জাতীয় সড়কের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের কাছে দরবার করে আসছিলেন।’’