প্রতীকী ছবি।
নয়া কৃষি আইনের সমর্থনে জেলায় এসেছিলেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাঁর কর্মসূচি ঘিরে রাস্তায় যেমন নামল দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ঢল, তেমনই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ‘ছোট, মেজ, সেজ’ ভাইদের একহাত নিলেন তিনি। রাজনৈতিক কারবারীদের একাংশের ব্যাখ্যা, ‘মেজ, সেজ’ ভাই বলতে জেলায় অধিকারী পরিবারের দিকেই ইঙ্গিত করছেন দিলীপ।
শনিবার দুপুর ১২টায় দিলীপের নেতৃত্বে বিজেপি’র একটি পথযাত্রা মহিষাদলের বাবুরহাট থেকে দেউলতোপা বাজারে যায়। মিছিলে ছিলেন বিজেপির জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়ক। কয়েকশো বাইক নিয়ে ওই মিছিল হয়। পরে একটি জনসভায় দিলীপ বলেন, ‘‘আমপানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক হাজার কোটি টাকা বাংলার জন্য বরাদ্দ করেছিলেন। সেই টাকা দিদির ভাইরা কাটমানি হিসেবে খেয়ে নিয়েছেন। তৃণমূল নেতারা এত দুর্নীতি করেছেন যে, দিদির ছোট, মেজ, সেজ সব ধরনের ভাই এখন বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ বাইরে বেরোলেই সাধারণ মানুষের হাতে মার খেতে হবে। কাটমানি হিসেবে যত টাকা উঠছে সব যাচ্ছে কালীঘাটে।’’
দিলীপের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার গত বছরে কৃষক সম্মাননিধি প্রকল্পে বছরে তিন কিস্তিতে ছ’হাজার টাকা কৃষকদের দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ২০২০ সালে করোনার জন্য অতিরিক্ত ২০০০ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই টাকা বাংলার কৃষকদের পেতে দেননি। কারণ তাতে মোদীর নাম হয়ে যাবে। রাজ্য সভাপতি জানিয়েছেন, আগামী ৫ অক্টোবর সারা বাংলায় বিডিও অফিস ঘেরাও অভিযান করবে বিজেপি। আমপানে দুর্নীতির প্রতিবাদে তাঁদের ওই অভিযান।
দিলীপ এ দিন যান খেজুরিতেও। তবে বিকেলে সেখানে বৃষ্টিতে কিছুটা তাল কেটেছে। শেষ পর্যন্ত মাঝপথেই পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে যান দিলীপ। খেজুরির বাঁশগোড়া থেকে হেঁড়িয়া পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল বিজেপি’র। হুডখোলা গাড়িতে ছিলেন দিলীপ। প্রায় হাজারখানেক মোটরবাইক বিজেপি রাজ্য সভাপতির গাড়ির চারদিকে ঘিরে রেখেছিল।
কর্মসূচিতে গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের ভিড় হলেও তাঁরা বা দিলীপ— কারও মুখেই ছিল না মাস্ক। ফলে এভাবে বিপুল জমায়েতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস সামন্ত। এ দিন তাঁর বাড়িতে যান দিলীপ। কিন্তু করোনায় নেতার মৃত্যুর পরেও কর্মসূচিতে যেভাবে ভিড় এবং নিয়মভঙ্গ করা হয়েছে, তাতে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা (কাঁথি) সভাপতি অনুপ চক্রবর্তীর ব্যাখ্যা, ‘‘শাসক দলের কর্মসূচিতে জমায়েত হয়। তখন প্রশাসন কিছুই করে না। ওরা জনসমর্থন দেখাতে চাইলে আমরাও দেখাব।’’