ভেঙেছে সাঁকো। নৌকায় পারাপারা পাঁশকুড়ার গোবিন্দ নগরে
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং জলাধারের ছাড়া জলে চোখ রাঙাচ্ছে কংসাবতী। জলের তোড়ে শনিবার ভেসে গিয়েছে মাইশোরা এবং গোবিন্দনগরের মধ্যে নির্মীয়মাণ কাঠের সেতু। গড় পুরুষোত্তমপুরে সেচ দফতরের তৈরি নতুন স্লুইস গেট দিয়েও জল ঢুকতে শুরু করেছে পাঁশকুড়ার ১৪ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে।
চলতি সপ্তাহে জেলায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে কংসাবতী নদীর জল বাড়ছিল। তার ওপর বৃহস্পতিবার মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় দ্রুত বাড়ছে নদীর জলস্তর। কয়েকদিন আগে গোবিন্দনগর গ্রামের মানুষজন মাইশোরায় আসার জন্য নিজেরা চাঁদা তুলে কংসাবতী নদীর ওপর একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করছিলেন। তুমুল জলস্রোতে এদিন সেটি ভেঙে যায়।
অন্যদিকে সদ্য তৈরি স্লুইস গেটের ফাঁক দিয়েও জল হু হু করে ঢুকতে শুরু করে পাঁশকুড়া পুর এলাকায়। খবর দেওয়া হয় সেচ দফতরে। সেচ দফতরের পাঁশকুড়া-২ ডিভিশনের এসডিও অভিনব মজুমদার বলেন, ‘‘স্লুইসটির শাটারে সামান্য ত্রুটি রয়েছে। জল কমলে সেটি ঠিক করে দেওয়া হবে। আপাতত আমরা জল ঢোকা বন্ধ করার জন্য যা প্রয়োজন, তা করব।’’
কোলাঘাটের বেহাল নিকাশি নিয়ে শুক্রবার থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বাসিন্দারা। যার জেরে এ দিন থেকে নিকাশি সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন। কোলাঘাট কোল্ড স্টোরেজ মোড় থেকে ছাতিন্দা পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের নিকাশিগুলির উপরে গজিয়ে ওঠা দোকান সরানোর জন্য মাইকে প্রচার চালায় ব্লক প্রশাসন। কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা মঙ্গলবার থেকে কোলাঘাটের সমস্ত নিকাশিগুলির কাজ শুরু করব।’’
ময়না এলাকায় চণ্ডীয়া ও কাঁসাই নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। চণ্ডীয়া নদীর জলস্তর বৃদ্ধির জেরে বলাইপন্ডা বাজার থেকে শ্রীধরপুর লকগেট এবং জায়গীরচক পর্যন্ত নদী বাঁধের বেশ কয়েক জাগায় ধস নেমেছে।
গড় পুরুষোত্তমপুরে স্লুইস গেটে ফাঁক দিয়ে জল ঢুকছে
এ বার সকাল থেকে দোনাচক, মগরা, পরমানন্দপুর ও জায়গীরচক এলাকায় নদী বাঁধের ধসে যাওয়া অংশগুলিতে কাঠের গুঁড়ি পুঁতে এবং মাটির বস্তা ফেলে মেরামতির কাজ চলছে। ময়নার কাঁসাই নদীর বাঁধ অবশ্য অক্ষতই রয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে বাঁধে সব সময় নজরদারি চালাচ্ছে সেচ দফতর। সেচ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘চণ্ডীয়া ও কাঁসাই নদীর জলস্তর এখনও বাড়ছে। চণ্ডীয়া নদী বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে মেরামতির কাজ চলছে।’’
ভরা কটালে জোয়ারে বাঁধ ভেঙে রূপনারায়ণের জল এ দিনও ঢুকেছে তমলুক পুরসভায়। নতুন করে ৬০ টি পরিবারের বাড়ি ডুবেছে। আগে ভেসেছিল ১৮ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ড। এ দিন ভেসেছে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ। তমলুকের পুরপ্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘এ দিন দুপুরে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় নতুন করে ৬০টি বাড়ি জলমগ্ন হয়েছে। প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের এ দিনও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।’’