ফাইল চিত্র
বাড়ির বাস্তু জমিতেই পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিহত সিআরপি জওয়ানের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হবে। শুধু সিআরপি নয়, সবংয়ের ভূমিপুত্র শ্যামলকুমার দে-কে ‘গান স্যালুটে’ শ্রদ্ধা জানাবে জেলা পুলিশও।
আজ, রবিবার সকালে সবংয়ের দণ্ডরা পঞ্চায়েতের সিংপুর গ্রামে পৌঁছবে শ্যামলের দেহ। শুক্রবার দুপুরে জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগের বিজবেহারা হাইওয়েতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন তিনি। বাবা-মা বাদলকুমার দে ও শিবানী দে মৃত ছেলেকে শেষ দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। গ্রামের ‘বীর’ সন্তানকে শেষবার দেখতে প্রহর গুনছে গ্রামবাসীও।
কথা ছিল, শনিবার বিকেলেই শ্যামলের দেহ পৌঁছবে। তবে সিআরপি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতায় দেহ পৌঁছতে রাত সাড়ে আটটা বাজবে। রাত ১১টা নাগাদ জেলায় এসে মেদিনীপুরের মর্গে দেহ রাখা হবে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাতে দেহ মেদিনীপুরে পৌঁছে গেলেও রবিবার সকালেই সবংয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ওই সিআরপিএফ জওয়ানের অন্ত্যেষ্টি করতে আমরা সব প্রস্তুতি নিচ্ছি। দেহের সঙ্গে ১০জন সিআরপি প্রতিনিধি আসবেন বলে জেনেছি। সিআরপি ও আমরা জেলা পুলিশ আলাদা করে গান স্যালুট দেব।”
২০১৭সালের ৩ জুন জন্মু-কাশ্মীরে জাতীয় সড়কে জঙ্গি হানায় সবংয়েরই মশাগ্রামের বাসিন্দা সেনা জওয়ান দীপক মাইতি নিহত হন। শ্যামলের মৃত্যু সেই স্মৃতি উস্কে দিয়েছে। এ দিনও গ্রামে প্রস্তুতি দেখে গিয়েছেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া ও বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া। করোনা সতর্কতা মেনেই শেষ বিদায়ের বন্দোবস্ত হচ্ছে। পড়শি যুবক শুভজিৎ দাসের কথায়, “শ্যামল দে আজ আমাদের গোটা দেশের গর্ব। করোনার বিধি থাকলেও আবেগ তো চেপে রাখা যাবে না। তাই বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের কথা বলা হয়েছে।”
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে খবর, সকালে দেহ পৌঁছনোর পরে প্রথমে রাখা হবে বাড়ির অদূরে সিংপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। উঁচু-নিচু মাঠ বালি দিয়ে সমান করা হয়েছে। সেখানেই সকলে শ্রদ্ধা জানাবেন। জেলা পুলিশের তরফে সেখানেই ‘গার্ড অফ অনার’ জানানো হবে। পরে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাড়ির সামনে বাস্তু জমিতে। ওই জমির একধারে অন্ত্যেষ্টির প্রস্তুতি সারা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় নতুন করে মোরাম ফেলা হয়েছে। নিহত জওয়ানের দাদা শান্তনু দে বলেন, “গ্রামের মানুষ ও প্রশাসন যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেহাটি-তেমাথানি রাস্তার বেলতলা মোড়ে তোরণ করা হয়েছে। সেখান থেকে পশ্চিমে ২ কিলোমিটার রাস্তায় গ্রামবাসীরাই আগাছা কেটে রাস্তা পরিস্কার করেছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকেও মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন শুরু ভাইয়ের আসার অপেক্ষা।”