ময়না মাছের ভেড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
এলাকার নাম কানে এলেই মাথায় প্রথম আসে মাছ চাষের কথা। ‘ময়না-মডেল’— জেলার পাশাপাশি, রাজ্যবাসীর কাছে চেনা শব্দ। কিন্তু এই ময়নার মাছ চাষিদের জন্য এখনও প্রতিশ্রুতি মতো তৈরি হয়নি মৎস্য-হাব। এই বিষয়টি যেমন লোকসভা ভোটে ওই বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, আবার এখানেরই বাকচা এলাকাও ভোটের নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের আওতাধীন ময়না বিধানসভা এলাকা বিভিন্ন রকমের মাছ চাষের জন্য পরিচিত। এখানের মাছ চাষকে ‘ময়না মডেল’ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ, প্রযুক্তি প্রয়োগ, সংরক্ষণ এবং বিপণনের ব্যবস্থা করতে ‘মৎস্য হাব’ তৈরির পরিকল্পনা করে রাজ্য সরকার।
বেশ কয়েক বছর কাটলেও হাব হয়নি। ময়নার ভোট প্রচারে এটি বিজেপি হাতিয়ার। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘ময়নার বেশির ভাগ বাসিন্দার জীবিকা ও অর্থনীতি মাছ চাষ ও ব্যবসায় নির্ভরশীল। অথচ এখনও রাজ্য সরকার মৎস্য হাব বানাল না।’’ এ নিয়ে ময়না ব্লক তৃণমূল সভাপতি সন্দীপব্রত দাসের দাবি, হিমঘর তৈরি, জল পরীক্ষাগার এবং আধুনিক সুযোগ সুবিধা যুক্ত মাছের বাজার গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ময়নার ভোটে প্রভাব ফেলবে বাকচা পঞ্চায়েত এলাকা। রাজনৈতিক অশান্তিতে এখানে তৃণমূল-বিজেপি নেতা খুন হয়েছেন। অশান্ত ওই এলাকায় বিজেপির শক্তি বেশি। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী অশোক ডিন্ডা বাকচাতেই প্রায় ১২ হাজার ভোটে ‘লিড’ পান। লোকসভা ভোটে তাই তৃণমূলের গলায় বাকচা ‘কাঁটা’ হয়েই রয়েছে। অবশ্য সামগ্রিকভাবে এবার ময়না বিধানসভায় তৃণমূল এগিয়ে থাকবে বলে দাবি দলের ব্লক নেতৃত্বের। সন্দীপব্রত বলছেন, ‘‘এখন আগের পরিস্থিতি নেই। ময়নার বাকি এলাকাতেও আমরাই এগিয়ে থাকব।’’ আর বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘বাকচা ছাড়া, গোকুলনগর, তিলখোজা, ময়না-১, ২ পঞ্চায়েত এলাকায় আমাদের দলের জনসমর্থন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। লোকসভা ভোটের ফলে তা প্রমাণ হয়ে যাবে।’’