প্রতীকী চিত্র।
ধর্মীয় সভায় ভক্তদের ভিড় ছিল ভালই। সেই ভিড়ে মিশে মহিলা ভক্তদের হার, পার্স, মোবাইল-সহ নানা সামগ্রী চুরি করেছিলেন আরেকদল মহিলাই। রবিবার রাতে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ সেই সাত মহিলা দুষ্কৃতীর দলকে গ্রেফতার করল।
ধৃত লক্ষ্মী রায়, রুকু রায়, শেরসা গোয়ালা, চিনি যাদব, দুর্গা সাহু, সোনালী কুমারী ও রাজেশ্বরী গোয়ালার বয়স ৫০-৬০ বছরের মধ্যে। তারা নিজেদের হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর ও বর্ধমানের বাসিন্দা বলে পুলিশকে জানিয়েছে। যদিও পুলিশের অনুমান, অবাঙালি ওই মহিলারা সকলেই হুগলির ব্যাণ্ডেল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা সাতজন মহিলাকে গ্রেফতার করেছি। এরা একটি চক্র বলে মনে হচ্ছে। যে কোনও ধরনের ভিড়ে মিশেই এ সব কারবার চালায় এই মহিলারা। তাই ধর্মীয় সভার ক্ষেত্রেও মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।”
রবিবার সকাল থেকে বিকেল নিমপুরার আর্য বিদ্যাপীঠের মাঠে ওই ধর্মীয় সভায় লক্ষাধিক মানুষের ভিড় ছিল। সেখানেই জনা ষোলো ১৬ মহিলার হার, পার্স, মোবাইল-সহ নানা সামগ্রী চুরি যায় বলে অভিযোগ ওঠে। চুরির বিষয়টি কয়েকজন মহিলা টের পেতেই পাকড়াও করা হয় এক মহিলাকে। পরে খবর পেয়ে তৎপর হয় টাউন পুলিশ। আটক হওয়া মহিলাকে জেরা করে জানা যায়, এর পিছনে একটি বড় চক্র রয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে দুষ্কৃতী দলের মহিলারা এলাকা ছেড়েছে। পরে পুলিশ হানা দেয় গিরিময়দান স্টেশনে। সেখানে ৬ জন মহিলাকে আটক করলেও কয়েকজন ট্রেনে উঠে চম্পট দেয়। পরে থানায় গিয়ে চারজন মহিলা ভক্ত তাঁদের সোনার হার ছিনতাইয়ের অভিযোগ জানান। তাঁদের মধ্যে মিতালি ঘোষ নামে নিমপুরার এক মহিলা ভক্তের স্বামী স্বপন ঘোষ অভিযোগ দায়ের করেন। মিতালি বলেন, “স্বামীর মোটরবাইক থেকে নেমে এগিয়ে যেতেই ভিড়ের মধ্যে কেউ আমার জুতো চেপে দেয়। অনেকে ঠেলাঠেলি করতে থাকে। আমি চিৎকার করে। ভিড় একটু হালকা হতেই দেখি আমার গলার সোনার হার নেই। একজন মহিলা দৌড়ে পালাচ্ছিল দেখে আমার স্বামী তাকে ধরে পুলিশে জানায়।” ধৃতদের থেকে দু’টি হার উদ্ধার হলেও তা সোনার জল করা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত মহিলাদের একটি বড় চক্র রয়েছে। যেখানেই জনসমাগম হয় সেখানেই ভিড়ে মিশে যায় এরা। নিশানায় থাকে মূলত মহিলারাই। তারপর চলে ‘অপারেশন’। ধর্মীয় সভায় ভিড়ের মধ্যে এমন ঘটনার পরে অভিযোগ উঠেছে অনুষ্ঠানস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। সঞ্চয়িতা সমাদ্দার নামে এক ভক্ত বলেন, “এত মানুষের ভিড় হয়েছিল। অথচ পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী ছিল না। সিসিটিভির ব্যবস্থা করা হয়নি। সংগঠনের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন তাঁদেরও বিষয়টি দেখা উচিত।”
সংগঠকদের অন্যতম বিদ্যুৎকুমার চৌধুরী অবশ্য বলেন, “লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল। আমরাও নিরাপত্তাকর্মী নিযুক্ত করেছিলাম। এত ভিড়ের মধ্যে কিছু ঘটনা ঘটেই থাকে।’’