চলছে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।
অরণ্যশহর লাগোয়া জঙ্গল সাফ করে বনভূমি দখল হয়ে যাচ্ছে। বন বিভাগ ও প্রশাসনিক মহলে নালিশ জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের কাশিয়ায় ঝাড়গ্রাম-জামবনি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বন সুরক্ষা কমিটির সদস্য সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। অবরোধের জেরে ঝাড়গ্রাম-জামবনি রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়।
বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যদের অভিযোগ, ঝাড়গ্রাম শহরের উপকন্ঠে বেনাগেড়িয়া, শ্রীরামপুর, জারালাটা এলাকায় জঙ্গলের গাছ কেটে বনভূমি দখল চলছে। গত কয়েক মাসে অবৈধ ভাবে বনভূমিতে বহু বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। অথচ বনবিভাগ নিশ্চুপ। স্থানীয় বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা ইতিমধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেছেন। নবান্নেও লিখিত অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও প্রতিদিন বনভূমি দখল হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ, একটি চক্র সুকৌশলে বনভূমি দখলে নেমেছে। ওই চক্রে স্থানীয় কিছু লোকজন রয়েছেন। টাকা নিয়ে বহিরাগতদের বনভুমিতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে বাইরের বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বাড়িঘর তৈরি করে বসবাস করছেন।
এ দিন বেনাগেড়িয়া, জারালাটা, শ্রীরামপুর, সুয়াবাসা, কন্যাডোবা, দরখুলি, কাশিয়া সহ ২০টি বনসুরক্ষা কমিটির কয়েকশো সদস্য কাশিয়া মাঠে আলোচনায় বসেন। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কাশিয়ায় রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। বিক্ষোভকারী রামলাল হাঁসদা, রবি রানা, জগা সরেন জানালেন, জেলার বিভিন্ন ব্লকের ও অন্য জেলার লোকজন এসে বনভূমি দখল করে নিচ্ছে। বন দফতরকে বারবার জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। শহর লাগোয়া বনভূমির প্রাকৃতিক জঙ্গল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে বিস্তীর্ণ বনভূমির জঙ্গল সাফ হয়ে যাবে। ওই সব এলাকার জনজাতি-মূলবাসী মানুষজন জঙ্গলের শুকনো ডাল, শালপাতা সহ বনজ সম্পদ সংগ্রহ করে দিন গুজরান করেন। জঙ্গল সাফ হয়ে গেলে তাঁরা রুজি হারাবেন। গরু-ছাগলের চারণভূমিও আর থাকবে না বলে তাঁদের আশঙ্কা। বিকেলে অবরোধস্থলে আসেন ঝাড়গ্রামের এসডিপিও অনিন্দ্যসুন্দর ভট্টাচার্য ও ঝাড়গ্রাম থানার আইসি পলাশ চট্টোপাধ্যায়। অবরোধকারীদের দাবি, বনভূমিতে জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করতে হবে। না হলে আন্দোলন চলবে।