Jhargram

করমে চাই  ছুটি, অবরোধ  

তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার পরই প্রতি বছর করমে ‘সেকশনাল হলিডে’ ঘোষণা করা হয়। রাজ্যের অর্থ ও অডিট দফতর গত ৩০ অগস্ট ওই ছুটির নির্দেশিকা জারি করেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাজ্যে এখন উৎসব মানেই ছুটি। মুখ্যমন্ত্রী ছুটি ঘোষণায় দরাজহস্ত। এ বারও কুড়মিদের উৎসব করম পরবে সেকশনাল হলিডে ঘোষণা হয়েছে। তবে তাতে সন্তুষ্ট নয় কুড়মি সংগঠনগুলি। করম পরবে সর্বজনীন ছুটির দাবিতে শনিবার ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে তাই চলল অবরোধ। ঝাড়গ্রামে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচলও বন্ধ ছিল।

Advertisement

তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার পরই প্রতি বছর করমে ‘সেকশনাল হলিডে’ ঘোষণা করা হয়। রাজ্যের অর্থ ও অডিট দফতর গত ৩০ অগস্ট ওই ছুটির নির্দেশিকা জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যাঁরা ওই উৎসব পালন করেন সেই সব রাজ্য সরকারি কর্মীরা ওই ছুটি পাবেন। কুড়মিদের ক্ষোভ, বিজ্ঞপ্তিতে সেকশনাল হলিডে বলা হলেও কুড়মি সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ নেই।

প্রতিবাদে ছোটনাগপুর টোটেমিক কুড়মি মাহাতো সমাজের ডাকে এদিন জঙ্গলমহল জুড়ে চার জেলায় ১২ ঘণ্টার ‘হুড়কা জাম’ (পথ অবরোধ) হয়েছে। পথে নেমেছিল অন্যান্য বিভিন্ন কুড়মি সংগঠন। কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ)-এর রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, ‘‘পশ্চিবঙ্গের বিশাল সংখ্যক মানুষ এই উৎসব পালন করেন। তাই সবার জন্য ছুটি দিতে হবে।’’ সারা ভারত কুড়মি সমন্বয় সমিতির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আহ্বায়ক অশোক মাহাতোর কথায়, ‘‘আমরা সরকারের কাছে বারেই বারেই পূর্ণ ছুটির জন্য আবেদন রেখেছি। আবেদনে সাড়া না পেয়ে পথে নেমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতোর ক্ষোভ, ‘‘সারাদিন অবরোধের পরও প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকা নেই।’’

Advertisement

ঝাড়গ্রাম শহরের সারদাপীঠ মোড়ে বাঁশের ব্যারিকেড বেঁধে অবরোধ করেন কুড়মিরা। ডিজে বাজিয়ে নাচও চলে। গ্রামীণ এলাকার দুবরাজপুর, জামবনি মোড়, লোধাশুলি, দহিজুড়ি, লালগড়, শিলদা, বেলপাহাড়ি, বড়শোল, সাঁকরাইল ও নয়াগ্রামে অবরোধ হয়েছে। কলকাতা-মুম্বই জাতীয় সড়কের গুপ্তমণি এলাকাতেও অবরোধ করা হয়। অরণ্যশহরে কুড়মিরা বক্স বাজিয়ে বাইক মিছিল করেন। ছিলেন শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌতম মাহাতোও।

শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরেও পথ অবরোধ করেছেন কুড়মিরা। মেদিনীপুর গ্রামীণের ধেড়ুয়ার মালবাঁধিতে মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম, ভায়া ধেড়ুয়া রাজ্য সড়কে দীর্ঘক্ষণ অবরোধ চলে। আটকে পড়ে বহু গাড়ি। শালবনির চ্যাংশোলে অবরোধ হয়েছে ভাদুতলা-লালগড় সড়কে। টায়ার ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ হয়েছে কেশিয়াড়ির পতিবাঁধ ও হাতিগেড়িয়ায়। গোয়ালতোড়ের দুটি স্থানে পথ অবরোধ হয়। পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজের গোয়ালতোড় ব্লক কমিটির পক্ষ থেকে সকাল ৭ থেকে ১০টা সিদো-কানহো মোড় ও পিংবনির কাদাশোলে অবরোধ করা হয়। ফলে, সকালেই গোয়ালতোড়-হুমগড় ও গোয়ালতোড়-সারেঙ্গা রাস্তায় যানজট হয়। সংগঠনের রাজ্য কমিটির উপদেষ্টা বীরেন মাহাতো বলেন, ‘‘৬ সেপ্টেম্বর করম পরব। সে দিন পূর্ণ দিবসের ছুটির দাবিতেই আমরা গোয়ালতোড়ের দু’টি ও শালবনি, কেশপুরেও প্রতীকী পথ অবরোধ করেছি।’’

সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকারের কটাক্ষ, ‘‘রাজ্য সরকার কর্মনাশা ছুটিতেই বেশি উৎসাহী। তাহলে করম পরবে ‘সেকশনাল হলিডে’ কেন? প্রশ্ন স্বাভাবিক।’’ তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো পাল্টা বলেন, ‘‘আগের সরকারের আমলে তো করমে ছুটিই দেওয়া হত না। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই তা শুরু হয়েছে। কুড়মি সংগঠনগুলির দাবি খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার পূর্ণ ছুটি দিলে খুবই ভাল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement