—প্রতীকী চিত্র।
বিশ্বকর্মার বাহন হাতি। দফতরে বিশ্বকর্মা পুজো করে হাতির উৎপাত কমার প্রার্থনাই জানালেন বনকর্মীরা।
বন দফতরের রূপনারায়ণ ডিভিশনের রেঞ্জ অফিসগুলিতে সোমবার ধুমধাম করে বিশ্বকর্মা পুজো হয়। সেখানেই বনকর্মী, হুলাপার্টি ও বন সুরক্ষা কমিটির অনেক সদস্য ওই প্রার্থনা করেছেন। এ কথা জানিয়েছেন তাঁরা নিজেই। শুধু বন দফতরই নয়, জঙ্গল লাগোয়া এলাকার গ্রামগুলির বাসিন্দারাও বিশ্বকর্মা পুজো করে একই প্রার্থনা করেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, গোয়ালতোড়, শালবনি ব্লক এলাকায় এখন প্রায় সারা বছরই হাতির আনাগোনা থাকে। এইসব এলাকায় হাতির দল মূলত আসে ঝাড়গ্রামের দিক থেকে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা গোয়ালতোড়, গড়বেতা হয়ে বাঁকুড়া জেলার দিকে চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। অনেকসময় এইসব এলাকাতেই রয়েও যায় কিছুদিন। কৃষি প্রধান এই এলাকায় হাতির যাতায়াতে ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রচুর। ঘটে প্রাণহানিও। বন দফতরকে হাতি সামলাতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়। দিনে-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে হাতিদের পিছনে ছোটেন বনকর্মী, বন সুরক্ষা কমিটি ও হুলাপার্টির সদস্যরা। হাতির দল চলে এলে অনেক সময়ে বনকর্মীরা বাড়িও ফিরতে পারেন না। এই পরিস্থিতি থেকেই মুক্তি চাইছেন তাঁরা।
রূপনারায়ণ ডিভিশনের এক রেঞ্জার বললেন, "বিশ্বকর্মার বাহন হাতি। দেবশিল্পীর পুজোর সঙ্গে হাতিরও পুজো হয়। তাই দেব ও তার বাহনের কাছে প্রার্থনা করেছি হাতির উৎপাত যেন কমে।" রূপনারায়ণের ডিএফও মনীশ যাদব বলেন, "ডিভিশনের সব রেঞ্জেই বিশ্বকর্মা পুজো হয়েছে। দফতরের কর্মীরা তো বটেই, বন দফতরের সঙ্গে যুক্ত সবাই পুজোয় যোগ দিয়েছেন। পুজোর সময়ও হাতি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।"
এদিন গড়বেতা, আমলাগোড়া, গোয়ালতোড় রেঞ্জেও ঘটা করে বিশ্বকর্মা পুজো হয়েছে। পুজো হয়েছে হুমগড়, মাহালিসাই, চন্দ্রকোনা রোডের রেঞ্জের দফতরেও। পুজোর আয়োজন থেকে প্রসাদ দেওয়ার কাজ করার ফাঁকেই বনকর্মীদের আলোচনায় এদিন ঘুরেফিরে এসেছে হাতির প্রসঙ্গ। আমলাগোড়ার রেঞ্জার চঞ্চল গোস্বামী, গোয়ালতোড়ের রেঞ্জার বাবলু মাণ্ডিরা বলেন, "পুজোর সময় হাতির খবরাখবরও নেওয়া হয়েছে। এলাকার মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। গড়বেতা, গোয়ালতোড় ব্লকে দলছুট ৪টি হাতি ঘোরাফেরা করছে, তাদের গতিবিধির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।"
বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য সোমবার ও মঙ্গলবার হাতি তাড়ানোর কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন হুলাপার্টির সদস্যরা। আমলাগোড়া রেঞ্জের হুলাপার্টির এক সদস্য বলেন, "এইসময় আর হাতিদের তাড়াবো না। কারণ পুজোয় তাদের উৎপাত কমার জন্য প্রার্থনা করেছি। আর হাতিই তো বিশ্বকর্মার বাহন।’’