স্টেশনে নতুন ভবন ও শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন মেচেদার ভোল পাল্টাচ্ছে অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে। ওই একই প্রকল্পে এবার নয়া রূপ পেতে চলেছে পাঁশকুড়া স্টেশনও। সেখানে প্রথম দফায় প্রায় ৮ হাজার বর্গফুটের একটি নতুন ভবন তৈরির কাজের সূচনা হল সোমবার। নতুন ভবনের সঙ্গে জুড়ে যাবে নতুন ফুটওভার ব্রিজ। স্টেশনের দুই দিকের যাত্রীরা ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে পারবেন। তাতে রেললাইন পারাপার সংক্রান্ত দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমবে বলে আশা
করা হচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন পাঁশকুড়া। জংশন স্টেশন হওয়ায় দিনরাত এই স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় লেগেই থাকে। প্রতিদিন গড়ে ৪০০টিরও বেশি ট্রেন পাঁশকুড়ার উপর দিয়ে চলাচল করে। স্টেশনের ঢোকার মুখেই রয়েছে টিকিট কাউন্টার। পাঁশকুড়া লেভেল ক্রসিংয়ে একটানা যানজটের কারণে ঘাটালের দিক থেকে বাস যোগে আসা রেলযাত্রীরা সময় মতো ট্রেন ধরতে পারেন না। ফলে অধিকাংশ যাত্রীই লেভেল ক্রসিংয়ের বেশ কিছুটা আগে কনকপুরে বাস থেকে নেমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন পেরিয়ে খুব অল্প সময়ে পৌঁছে যান পাঁশকুড়া স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে। এদিকে, ওই লাইন পেরোতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে।
পাঁশকুড়া স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে একটি ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে। কিন্তু সেটি ছ'নম্বর প্লাটফর্মে এসেই শেষ হয়ে গিয়েছে। রেলযাত্রীদের দাবি ছিল, কনকপুরের দিকে একটি টিকিট কাউন্টার করে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে জুড়ে দেওয়া হোক স্টেশনের দুই দিক। তাহলে স্টেশনের রেলযাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে লাইন পেরিয়ে টিকিট কাটতে আসতে হবে না। যাত্রীদের দাবি মেনে কয়েক বছর আগে নতুন ফুটওভার ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। এবার অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে পাঁশকুড়া স্টেশনের টিকিট কাউন্টার-সহ একাধিক অফিস স্থানান্তরে উদ্যোগী হল রেল। সেই কাজে স্টেশনে ঢোকার ঠিক আগে রেলের ফাঁকা জায়গায় নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
রেল সূত্রে খবর, প্রথমে ৮ হাজার বর্গ ফুটের একটি দোতলা নতুন ভবন তৈরি করা হবে। সেখানে টিকিট কাউন্টার, আরএমএস অফিস, আরপিএএফ অফিসের মতো একাধিক অফিস সরিয়ে আনা হবে। পাঁশকুড়া স্টেশনের অদূরে রেলপুকুর এলাকায় রেলের ‘রানিং রুম’ গড়ে তোলা হবে। এদিন পাঁশকুড়া স্টেশনের নতুন ভবনের কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। নতুন ভবনের কাজের সূচনার পাশাপাশি, পাঁশকুড়া স্টেশন চত্বরে নতুন শৌচাগার তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। নতুন ফুট ওভার ব্রিজটিকে নতুন টিকিট কাউন্টারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। প্লাটফর্মে থাকবে লিফটের ব্যবস্থাও। রেল সূত্রে খবর, পাঁশকুড়া স্টেশনের বর্তমান টিকিট কাউন্টার, আরপিএফ অফিস, রানিং রুম, আরএমএস অফিস যে ভবনটিতে রয়েছে, ভবিষ্যতে সেটিকে প্লাটফর্ম করে দেওয়া হবে। ফলে এক সঙ্গে অনেক ট্রেনকে পাঁশকুড়া স্টেশনে দাঁড় করানো যাবে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী বলেন, ‘‘অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে বহু স্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। পাঁশকুড়াতেও সেই কাজ শুরু হয়েছে এ দিন।’’