Birbaha Hansda

বিরবাহার গুরুত্ব বৃদ্ধি কি লোকসভার লক্ষ্যেই!

সোমবার বিরবাহাকে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের এসটি (আদিবাসী) সেলের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:১৬
Share:

বিরবাহা হাঁসদা। —নিজস্ব চিত্র।

সাঁওতালি সিনেমার জগৎ থেকে রাজ্যের শাসকদলের রাজনীতির মঞ্চে তাঁর অভিষেক। মন্ত্রী হয়েছেন আগেই। তারপর একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পর্ষদ ও সরকারি কমিটির দায়িত্ব পেয়েছেন বিরবাহা হাঁসদা। ঝাড়গ্রামের বিধায়ক বিরবাহা জেলার একমাত্র মন্ত্রী। এ বার প্রথম দলীয় পদও পেলেন তিনি।

Advertisement

সোমবার বিরবাহাকে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের এসটি (আদিবাসী) সেলের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই বিরবাহার এই পদপ্রাপ্তি। তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী দলের তরফে লিখিতভাবে বিরবাহাকে নতুন পদে নিযুক্তির কথা জানিয়েছেন।

এরপরই শাসকদলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা— তাহলে কি তৃণমূলের রাজনীতিতে বিরবাহাকে একেবারে সামনের সারিতে আনতে চান দলনেত্রী? গত কয়েক বছরে বিরবাহার উত্থান এবং তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে ওঠা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। উল্লেখ্য, গত বছর এবং এবারও একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে বিরবাহাকে বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়েছেন।

Advertisement

স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি প্রকল্পের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বিরবাহা বন দফতরের প্রতিমন্ত্রীও। তিনি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন, একাধিক সরকারি কমিটিরও মাথায় রয়েছেন। সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সনের পদও তাঁকে দেওয়া হয়েছে।

সাঁওতালি সিনেমার ‘মহানায়িকা’ থাকাকালীনই বিরবাহার রাজনৈতিক জীবন শুরু। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে মায়ের দল ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ঝাড়গ্রাম বিধানসভায় বিপুল ভোটে জিতেই মন্ত্রী হন। অথচ তার আগে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) এর সম্পাদক পদে থাকাকালীন পুরসভা, বিধানসভা ও লোকসভায় দাঁড়িয়ে তিনবার হেরেছিলেন বিরবাহা। তাঁর বাবা প্রয়াত নরেন হাঁসদা ছিলেন ঝাড়খণ্ডী আন্দোলনের প্রবাদ পুরুষ।

বাম আমলে ঝাড়গ্রামে সিপিএমকে নাস্তানাবুদ করেছিলেন নরেন। তিনি দু’বার বিনপুরের বিধায়ক হন। নরেনের প্রয়াণের পর তাঁর স্ত্রী চুনিবালাও দু’বার বিনপুর বিধানসভা থেকে জেতেন। কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরে চুনিবালার দলের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে যায়। তবে তাঁর কন্যা রাজনীতি এখন রীতিমতো উজ্জ্বল।

এতদিন তৃণমূলের সাংগঠনিক পদে না থাকলেও ঝাড়গ্রাম জেলায় শাসকদলের রাজনীতিতে মন্ত্রী বিরবাহার যথেষ্ট প্রভাব ছিল। এ বার দলের এসটি সেলের রাজ্য সভাপতির পদ দিয়ে দলীয়ভাবেও বিরবাহার গুরুত্ব বাড়ানো হল,মানছেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের একাংশ।

বিরবাহা বলছেন, ‘‘বিভিন্ন জেলায় গিয়ে এসটি সেলের বৈঠক করব। রাজনীতি সচেতন তরুণ প্রজন্মের আদিবাসী যুবক-যুবতীদের সংগঠনে নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

চলতি বছরে মার্চ ও অগস্টে দু’দফায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু কলকাতায় সফরে এসেছিলেন। রাজ্যের তরফে দু’বারই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ‘মিনিস্টার ইন ওয়েটিং’ ছিলেন বিরবাহা।

তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী লোকসভা ভোটের আগে জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলিতে সংগঠনের রাশ পোক্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঝাড়গ্রামের মন্ত্রীকে। ঝাড়গ্রাম জেলার প্রতিও তাঁকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement