ব্লক অফিস ভাঙচুরে অভিযুক্তদের সঙ্গে মেদিনীপুর সংশোধনাগারে গিয়ে দেখা করলেন মানস ভুঁইয়া। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
কংগ্রেসের ডাকা বন্ধের দিনে সবং ব্লক অফিসে ভাঙচুরের ঘটনায় ধৃত কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে সোমবার ফের মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আসেন স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। স্বপন মাইতি, নিমাই মান্না, জয়দেব মহাপাত্র সহ ধৃত পাঁচজন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রয়েছেন। দলের ধৃত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে সংশোধনাগারে যান মানসবাবু। সঙ্গে ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুইয়াঁ, সবং ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অমল পণ্ডা, প্রাক্তন জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে প্রমুখ। প্রায় মিনিট পনেরো সংশোধনাগারে ছিলেন মানসবাবুরা। পরে সবংয়ের বিধায়ক বলেন, “জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই দেখা করতে এসেছিলাম। আমার ৪৩ বছরের অভিজ্ঞতায় একটা কাচ ভাঙার জন্য ৩০৭ ধারা দেওয়া, খুনের চেষ্টা মামলা, আমি দেখিনি।”
সুর চড়িয়ে মানসবাবুর আরও মন্তব্য, “আমি জ্যোতিবাবুর অত্যাচারী রূপ দেখেছি, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ভয়ঙ্কর চেহারা দেখেছি, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে তাঁর পুলিশ, তাঁর প্রশাসন একটা কাচ ভাঙার জন্য ৩০৭ ধারা দেয়, এই প্রথম দেখলাম। এ রকম ব্যাভিচারী সরকার, অত্যাচারী সরকার জ্যোতিবাবুর সাড়ে ২৩ বছরে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ১১ বছরে আমার অভিজ্ঞতায় দেখিনি। লক্ষ্মণরেখা ছাড়িয়ে গিয়েছে এই জেলার পুলিশ। আমরা আইনি মানি। আইনের লড়াই করেই ওঁদের (ধৃত কংগ্রেস কর্মীদের) বের করে আনব।”
তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে মানসবাবু আরও বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠছে। এটা ভাল। নরেন্দ্র দাদা এবং মমতা দিদি। দাদা-দিদির মিলনক্ষেত্র এখন দিল্লি এবং বাংলার মাটি। এটা আগেও ছিল। তবে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করতেন সংখ্যালঘু ভোট পেতে। আস্তে আস্তে মানুষ বুঝতে পারছেন, নরেন্দ্র দাদা এবং মমতা দিদি অনেক কাছাকাছি আসছেন। তাই অরুণ জেটলি কালকে যে সব কথা বলেছেন, তার থেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত বিজেপি-তৃণমূল ভাই-ভাই। বাংলার সংখ্যালঘু মানুষ বুঝছেন, কোন জায়গায় গিয়ে কোনটা দাঁড়াচ্ছে। সব নাটক। সংখ্যালঘুদের কোনও উন্নয়ন হয়নি।” জেলার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কটাক্ষ করে সবংয়ের বিধায়ক বলেন, “এই জেলার তৃণমূল নেতারা রাতে কাঁদেন এবং চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি!’ কারণ, এই জেলায় তৃণমূলের সভাপতিও পুলিশ সুপার। তৃণমূলের সম্পাদকও পুলিশ সুপার।”
মানসবাবু আরও জানান, সবংয়ের ওসি আর বিডিওকে তাঁরা গোলাপ ফুল দেবেন। তাঁর কথায়, ‘‘ব্লক অফিসে কাচ ভাঙার ঘটনায় যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের পরিজনেরা বিডিওকে এবং ছাত্র পরিষদ কর্মী খুনের ঘটনায় ছাত্র পরিষদেরই যে সব কর্মীর উপরে অত্যাচার চালানো হচ্ছে, তাঁদের পরিজনেরা ওসিকে গোলাপ ফুল দেবেন। দিনটা শীঘ্রই ঘোষণা করব।”