মরসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই জলমগ্ন পাঁশকুড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির অফিসের অদূরে রেল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা। —নিজস্ব চিত্র
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতো শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকলেও মরসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই জেলার শিল্পশহর কিছুটা বেসামাল। বৃহস্পতিবার রাতে কয়েক পশলা বৃষ্টিতেই শিল্পশহরের একাধিক রাস্তা চলে গেল জলের তলায়। শুক্রবার সকালেও বন্দর আর শিল্পশহরের অনেক রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। জল নিকাশির অভাবে ৪২ নম্বর জাতীয় সড়কের শেষপ্রান্ত রানিচকে সমস্যায় পড়তে হল পথচারীদের। পাঁশকুড়াতেও শুক্রবার সকালে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে কয়ে জায়গায় জল জমে যাওয়ায় নাজেহাল হলেন পথচারীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত রাতের বৃষ্টির ফলে এদিন ভোর থেকে রানিচকে যে জায়গায় উড়ালপুল তৈরি হচ্ছে তার চারপাশ জুড়ে কিছু জায়গায় জল দাঁড়িয়ে যায়। হলদিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনকারী সংস্থার এক কর্মীর কথায়, ‘‘সকালে কারখানায় যাওয়ার সময় রাস্তায় জমা জলে অসুবিধা হয়েছে।’’ শুধু কারখানার শ্রমিকেরা নন, রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে থাকায় সমস্যায় পড়ে স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও। রানিচকের কাছেই রয়েছে একটি প্রাইমারি ও একটি হাইস্কুল। হাজার দুয়েক পড়ুয়া ওই রাস্তায় প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এ দিল জল জমে যাওয়ায় স্কুল যাওয়ার পথে তাদের বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়েছে বলে দাবি পড়ুয়াদের। শুধু রানিচক নয়, গতকাল রাতের বৃষ্টিতে চৈতন্যপুর মোড়েও রাস্তায় প্রায় হাঁটুসমান জল দাঁড়িয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় জল নিকাশির অব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ পুরনো। কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করে না। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা ডুবে যায় আর তার ফল ভুগতে হয় তাঁদের।
যদিও হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে এ বার অনেকটাই তৎপর পুরসভা। বর্ষা নামার আগেই তাঁরা পুরসভার সব ওয়ার্ডে মিটিং করেছেন। সেখানে ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপারভাইজারদের বলা হয়েছে, যে সব জায়গায় জল জমতে পারে তার তালিকা তৈরি করে পুরসভাকে পাঠাতে। তার ভিত্তিতেই ওই এলাকায়গুলিতে বর্ষার পর গাড়ি পাঠিয়ে জমা জল পরিষ্কার করা হবে। পুর পারিষদ (পূর্ত ও জল নিষ্কাশন) নারায়ণ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি তৈরি হয়েছে। যে সব এলাকায় জল জমে গিয়েছে সেই টাস্কফোর্সই সেখান থেকে দ্রুত তা সরিয়ে দিয়েছে। তবে রানিচকের ক্ষেত্রে উড়ালপুলের নির্মাণ কাজের জন্য কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’’
এদিন পাঁশকুড়ায় সকাল ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পাঁশকুড়া রেল ব্রিজের তলায় জল জমে যায়। ওই অংশে নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় জল ঠেলেই যাতায়াত করতে হয়েছে পথচারীদের। চলাচল করছে যানবাহন। পাঁশকুড়া থানা মোড় থেকে পাঁশকুড়া পুরাতন বাজার পর্যন্ত বেহাল রাস্তায় এ দিন বৃষ্টিতে আরও অসুবিধায় পড়তে হয়েছে পথচারীদের।