ভিড় নিয়ন্ত্রণে বাঁশের ব্যারিকেড। পাঁশকুড়া স্টেশনে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
বহু আবেদন, বিক্ষোভের পরে প্রায় সাত মাস পর আজ, বুধবার থেকে চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মগুলিতে চলেছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ভিড় সামলানোই যে বড় চ্যালেঞ্জ, মানছেন রেলকর্তারা।করোনা সংক্রমণের জেরে গত ২৩ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। আনলক পরিস্থিতিতে কিছু এক্সপ্রেস ট্রেন চললেও লোকাল ট্রেন বন্ধই ছিল। লোকাল ট্রেন চালুর দাবিতে সব মহল থেকে দাবি উঠতে শুরু করে। বিক্ষোভও হয়। গত ৫ নভেম্বর রাজ্য ও রেলের বৈঠকে ঠিক হয় বুধবার, ১১ নভেম্বর থেকে লোকাল ট্রেন চালু হবে। প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় খড়্গপুরের মধ্যে ৩৪টি লোকাল ট্রেন চলানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য আনা হয়েছে থার্মাল স্ক্রিনিং গান। বাঁশ ও দড়ির ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। প্রবেশ ও প্রস্থান চিহ্নিত করতে লাগানো হয়েছে নতুন বোর্ড।
রেলের জন সংযোগ আধিকারিক (খড়্গপুর ডিভিশন) আদিত্য চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রতিটি স্টেশনে করোনা সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় সামলাতে আরপিএফের পাশাপাশি থাকবে রাজ্য পুলিশও। রাজ্য সরকারের কাছে পুলিশ বাহিনী চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।’’
লোকাল ট্রেনে যাত্রীরা আগের মতো বসতে পারবেন না। নির্দিষ্ট দূরত্ব বিধি বজায় রাখতে দু’টি আসনের মাঝে একটি আসনে লাল রঙের ক্রস চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়েছে রেলের তরফে। ভিড় এড়াতে বেশি সংখ্যক টিকিট কাউন্টার খোলা রাখা হবে। রেলের এঁকে দেওয়া গণ্ডির মধ্যে দাঁড়িয়েই টিকিট কাটতে হবে যাত্রীদের। সমস্ত কিছু আয়োজন ঘুরে দেখে পাঁশকুড়া স্টেশন আরপিএফের ওসি এম কে সন্ন্যাসী বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রী সুরক্ষায় যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা নিয়েছি। ভিড় নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আরপিএফ কনস্টেবল স্টেশনে থাকবে। মাস্ক ছাড়া কোনও যাত্রীকে প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’’
দীর্ঘদিন পর লোকাল ট্রেন চালুর খবরে খুশি নিত্যযাত্রীরা। পাঁশকুড়ার বাসিন্দা অভীক মান্না বলেন, ‘‘হাওড়ায় বেসরকারি সংস্থায় কাজ করি। বাসে যাতায়াতে যা খরচ তাতে বেতনের প্রায় অর্ধেক খরচ হয়ে যেত। লোকাল ট্রেন চালু হলে সুবিধা তো হবেই।’’ কোলাঘাটের একটি ভ্রমণ সংস্থার মালিক অসীম দাস বলেন, ‘‘ব্যবসার কাজে প্রায়ই কলকাতা যেতে হয়। বাসে খরচ বেশি। ট্রেনে খরচ অনেক কমে যাবে।’’