উদ্ধার হওয়া জলের বোতল ভর্তি বাক্স। —নিজস্ব চিত্র।
খড়্গপুর রেল ডিভিশন জুড়ে চলছে বোতলবন্দি ভেজাল জলের কারবার। অভিযোগ, স্টেশন থেকে ট্রেন— সব জায়গাতেই পরিস্রুত বলে দাবি করে ভেজাল জলের বোতল বিক্রি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ করে আসছিলেন নিত্যযাত্রীরা। সম্প্রতি দেশের একটি রেল স্টেশনে সাধারণ পানীয় জলের কল থেকে পরিস্রুত পানীয় জলের নাম দেওয়া বোতলে জল ভরার ভিডিয়ো ছড়িয়ে গিয়েছে স্যোশাল মিডিয়ায়। তারপরে নড়েচড়ে বসল রেল কর্তৃপক্ষ। শুরু হল অভিযান।
রেল সুরক্ষা বাহিনী সূত্রে খবর, সোমবার খড়্গপুর স্টেশনের একটি স্টলে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮০টি জলের বোতল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয় ফাল্গুন পাত্র নামে ওই স্টলের মালিককে। শুধু খড়্গপুর স্টেশনই নয়, মঙ্গলবার সকাল থেকে এই ডিভিশনের বিভিন্ন ট্রেনে ও স্টেশনে অভিযান চলছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত খড়্গপুর ডিভিশন জুড়ে ভেজাল জল বিক্রির অভিযোগে ২৯টি মামলা রুজু হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২৭৬২টি জলের বোতল।
খড়্গপুর রেল ডিভিশনের অধিকাংশ স্টেশনের স্টেশনের স্টলেই রেল অনুমোদিত জলের বোতল পাওয়া যায় না। বদলে প্রায় অচেনা সংস্থার জলের বোতল রাখা থাকে। যদিও তার দাম রেল অনুমোদিত জলের বোতলের দামের সমান। সেই জল কিনেই প্রতিদিন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। যেমন বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুজয় দাস। অফিস যেতে টাটানগর-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেসে উঠে হকারের থেকে ২০ টাকা দিয়ে জলের বোতল কিনেছিলেন খড়্গপুরের ওই যুবক। সেই জলের বোতল খুলতে গিয়েই সুজয় বুঝতে পারেন তিনি ঠকেছেন। খড়্গপুরের বাসিন্দা কলকাতায় কর্মরত শ্রম দফতরের কর্মী অরিন্দম বসুরও ক্ষোভ, “ট্রেনে তো অধিকাংশ হকার অজানা সংস্থার নাম দেওয়া জলের বোতল বিক্রি করে। বাধ্য হয়ে সেটাই কিনতে হয়।’’
রেল সুরক্ষা বাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্টেশন ও ট্রেনে রেলের অনুমোদিত কয়েকটি নামী সংস্থার জল বিক্রির নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বিপুল মুনাফার প্রলোভনে ব্যবসায়ীরা তার বদলে নিম্নমানের জলের বোতল বিক্রি করে। এই জল পরিশ্রুত না হওয়ায় পেটের রোগের আশঙ্কা দেখা যায়।
খড়্গপুরের সিনিয়ার ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার বিবেকানন্দ নারায়ণ বলেন, “আমরা অভিযান শুরু করেছি। একদিনে বিপুল পরিমাণ জলের বোতল বাজেয়াপ্ত করে ৩১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অভিযান চলবে।”