Durga Puja Shopping

প্রতিবাদ আর দুর্যোগে পুজোর কেনাকাটায় ভাটা

দুর্গাপুজো উপলক্ষে জমে ওঠে সমস্ত ধরনের বাজার। সব থেকে বেশি জমজমাট হয় পোশাকের বাজার। পুজোর বাকি আর মাত্র ২৩ দিন। অথচ ভিড় নেই পোশাকের বাজারে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৫১
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ চলছে। কয়েকদিন আগে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদীদের আন্দোলন ছেড়ে উৎসবে ফেরার আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আর জি কর কাণ্ড যে এবার দুর্গাপুজোর উৎসবে অনেকটাই প্রভাব ফেলতে চলেছে তার আঁচ ইতিমধ্যে মিলেছে পুজোর বাজারে।

Advertisement

দুর্গাপুজো উপলক্ষে জমে ওঠে সমস্ত ধরনের বাজার। সব থেকে বেশি জমজমাট হয় পোশাকের বাজার। পুজোর বাকি আর মাত্র ২৩ দিন। অথচ ভিড় নেই পোশাকের বাজারে। অনেকেই এবারের পুজোকে উৎসবের মতো করে পালন করতে নারাজ। ফলে তার প্রভাব এসে পড়েছে পুজোর কেনাকাটায়। উৎসব বাদ দিয়ে নমো নমো করে পুজো সেরে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন অনেকে। দাবি একটাই। আর জি কর কাণ্ডের দোষীদের শাস্তি।

ফলে এবার পুজোর বাজার সে অর্থে জমেনি। সাধারণত পুজোর আগে ছুটির দিনগুলোতে পুজোর বাজারে ভিড় বাড়ে। ব্যবসায়ীদের আশা ছিল রবিবার অন্তত বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সেই আশায় জল ঢেলে দেয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। শুক্রবার রাত থেকে জেলায় চলছে ভারী বৃষ্টিপাত। ফলে পুজোর আগের চতুর্থ রবিবারেও কার্যত শুনশান রইল বাজারগুলো।

Advertisement

পাইকারি ও খুচরোর সস্তার পোশাকের বাজার হিসেবে পরিচিত তমলুকের রাধামণি বাজার। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা ভিড় জমান। টানা দুর্যোগের জেরে ক্রেতা কম বাজারে। রাধামণি বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী জয়দেব মাইতি বলেন, "অন্য বছর পুজোর এক মাস আগে থেকে বাজার চাঙ্গা হয়ে যায়। এবার হয়নি। বৃষ্টির কারণে শনিবার রাধামণি হাটেও সেভাবে ক্রেতারা আসেনি। রবিবারও সারাটা দিন পুরো মন্দা গিয়েছে। পুজোর বাজারকে মাথায় রেখে অনেক টাকার সামগ্রী কিনেছি। বিক্রি না হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।"

পুজোর আগে রবিবার হলদিয়ার সিটি সেন্টারের শপিং মলের মধ্যে থিকথিকে ভিড় দেখতে অভ্যস্ত কর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় দোকানদাররা। এ দিন নাগাড়ে বৃষ্টির কারণে সেই ভিড় কার্যত উধাও। মোহনা মার্কেটের একটি শাড়ি দোকানের বিক্রেতা জানান এবার বিক্রিতে ভাটা। একাধিক বস্ত্র মেলার কারণে পোশাকের দোকানে ভিড় কম বলে অনেকে মনে করছেন। হলদিয়ার দুর্গাচকের ক্ষুদিরাম স্কোয়্যার মোড়ের বস্ত্র ব্যবসায়ী ইমাদাদুল হোসেন বলেন, ‘‘শনিবার ও রবিবারের দিকে তাকিয়ে বসে থাকি। পুজোর আগে এই দুই দিনে ভাল ব্যবসা হয়। গুজরাত থেকে নানা ফ্যাশানের জামা কাপড় এনেছি। কিন্তু সে অর্থে বিক্রি নেই। শুধু একা বৃষ্টিকে ভিলেন সাজিয়ে কাজ নেই। মানুষের মনে আনন্দ নেই। অস্থিরতা কাজ করছে।"

এগরাতেও পুজোর কেনাকাটা করতে শহরের শপিং মল বা বাজারে সেই অর্থে বেরোতে দেখা যায়নি সাধারণ মানুষজনকে। ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে অধিকাংশ দোকান ফাঁকা। হাতে গোনা কয়েকজন ক্রেতাকে এ দিন শহরের বস্ত্র বিপণী ও শপিং মলে নজরে পড়ে। ক্রেতা না থাকায় শহরের অধিকাংশ দোকান বাজার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বন্ধ হয়ে যায়।

ক্রেতাদের দেখা মেলেনি তমলুক শহর, নন্দকুমার, ময়না, চণ্ডীপুর বাজারে। রবিবার ছুটির দিনে এমনিতেই তমলুক শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকে। তবে পুজোর সময় রবিবার পোশাক দোকান খোলা হয়ে থাকে। কিন্তু টানা বৃষ্টির জেরে এ দিন সকাল থেকে রাস্তায় লোকজন খুবই কম ছিল। শহরের অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। কয়েকটি নামী পোশাকের খোলা থাকলেও ক্রেতাদের দেখা মেলেনি। বৃষ্টিতে পুজোর বাজার ধাক্কা খেয়েছে কাঁথিতেও। রবিবার বেলা বাড়ার পর অধিকাংশ দোকানপাট খুলেছে। তবে দিনভর শহরের বেশ কয়েকটি শপিং মলের পাশাপাশি কাপড়ের দোকান ছিল প্রায় ফাঁকা। জুতো দোকানেও ভিড় ছিল না বললেই চলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement