Death

মৃত্যুতে প্রশ্ন জলাতঙ্ক সচেতনতা নিয়েই 

চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে আইডি-তে রোগীকে নিয়ে গেলেন না কেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গড়বেতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

কিছুদিন আগে কুকুর কামড়েছিল। উপসর্গ দেখে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়েছিল, সম্ভবত জলাতঙ্ক হয়েছে। তাই চিকিৎসকেরা রোগীকে কলকাতার বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরামর্শ মানেনি রোগীর পরিবার। পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পৌঁছয় ব্লক প্রশাসনের কাছে। বৃহস্পতিবার প্রশাসন পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা ১ ব্লকের আমকোপা অঞ্চলের জামুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ রানাকে (৪৮) উদ্ধার করে আইডিতে পাঠায়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শুক্রবার ভোরেই মৃত্যু হয় লক্ষ্মণের।

Advertisement

চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে আইডি-তে রোগীকে নিয়ে গেলেন না কেন? মৃতের স্ত্রী দীপালি জানান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি নেই তাঁদের। দীপালির কথায়, ‘‘লোকজন নেই। টাকা পয়সা নেই। কী ভাবে নিয়ে যাব!’’ ব্লক স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য জানিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দাদের আতঙ্কের কিছু নেই। কুকুরে কামড়ানোর পর অসুস্থ ওই ব্যক্তির দেখভাল করা প্রত্যেককেই বিনামূল্যে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি) দেওয়া হবে স্বাস্থ্য দফতর থেকে। জলাতঙ্ক সচেতনতা অভিযান ব্লক জুড়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএমওএইচ আশিস কুমার মিদ্যা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, লক্ষ্মণকে বেশ কিছুদিন আগে কুকুরে কামড়েছিল। গত ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করান বাড়ির লোকজন। সেখানে চিকিৎসকেরা জলাতঙ্ক সন্দেহে লক্ষ্মণকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ‘রেফার’ করেন। কিন্তু রোগীর বাড়ির লোকজন বেলেঘাটা না নিয়ে গিয়ে লক্ষ্মণকে জামুরিয়া গ্রামের বাড়িতেই নিয়ে চলে আসেন। তাঁর মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল। মাঝেমধ্যে চিৎকার করছিলেন তিনি। এই অবস্থা দেখে বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। খবর পেয়ে ওই ব্যাক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বৃহষ্পতিবার রাতে গ্রামে যান গড়বেতা ১ ব্লকের যুগ্ম বিডিও বিশ্বনাথ ধীবর, ব্লকের সমাজকল্যাণ আধিকারিক রঞ্জন বাস্কে সহ ব্লকের একটি প্রতিনিধি দল। ব্লক আধিকারিকেরা নিজেরাই টাকা দিয়ে পুলিশ ও স্বাস্থ্যদফতরের সাহায্যে রাতেই গুরুতর অসুস্থ লক্ষ্মণকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে পাঠান। এই ঘটনায় গ্রামে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এদিনই স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি দল গ্রামে গিয়ে অভয় দিয়ে এসেছেন। বিএমওএইচ আশিস কুমার মিদ্যা বলেন, ‘‘আতঙ্কের কিছু নেই, গ্রামে মেডিক্যাল টিম আছে।’’

Advertisement

লক্ষ্ণণ-দীপালির এক ছেলে, এক মেয়ে। স্বামীকে হারিয়ে দিশাহারা দীপালি। এদিন সকালে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে আসেন গড়বেতা ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement