শৌচাগার ভেঙে ক্লাব বানানো হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
ছিল রুমাল। হয়ে গেল বিড়াল!
সুকুমার রায়ের ‘হ য ব র ল’-এর মতোই কাণ্ড কারখানা ঘটছে কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের চৌধুরীবাড় গ্রামে। সরকারি যাত্রী প্রতীক্ষালয় এবং সুলভ শৌচালয় রাতারাতি বদলে যাচ্ছে ক্লাব ঘরে— গ্রামবাসীদের চোখের সামনেই! এ বিষয়ে তাঁরা কাঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। দাবি, শাসকদলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরাই ওই ক্লাবটি বানাচ্ছেন।
কাঁথি শহর লাগোয়া দেশপ্রাণ ব্লকের মুকুন্দপুর এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। নিয়মিত হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন এই বাজার এলাকা দিয়ে। বিরাট বাজারে রয়েছে কয়েকশো দোকানপাট। স্থানীয় রুটের বাস চলে বাজারের উপর দিয়ে। বাসের যাত্রীদের জন্য মুকুন্দপুর বাজার সংলগ্ন চৌধুরীবাড়ে সরকারি জমিতে একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ে উঠেছিল। গত বছর ওই প্রতীক্ষালয় ঠিক পিছনে একটি বড় মাপের সুলভ শৌচালয় তৈরি করা হয়। কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর এলাকা উন্নয়ন তহবিল এবং জেলা পরিষদের টাকায় সেটি বানানো হয়েছিল। তবে সেটি উদ্বোধন করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রতীক্ষালয় এবং শৌচালয়টি কেউ বা কারা প্রকাশ্যে ভেঙে ফেলছে। আর সেখানে বানানো হচ্ছে ক্লাব ঘর। কয়েকদিন আগে ভগ্ন ওই শৌচাগারের সামনে ‘ক্লাব নাইট মুন’ নামে একটি ব্যানার লাগানো হয়। দেওয়ালেও রং দিয়ে সেই নাম লেখা হয়। শাসক দলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশ ওই সরকারি সুলভ শৌচালয় দখল করেছে বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। এ ব্যাপারে কাঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু তার পরেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যদিও কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলছেন, ‘‘থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়ে থাকলে নিশ্চিতভাবে পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।’’
পুলিশি পদক্ষেপ না করার প্রতিবাদে শনিবার বিকালে মুকুন্দপুর বাজারে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। যদিও দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা উত্তর কাঁথি বিধানসভার তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তরুণ জানার দাবি, ‘‘ঘটনাটি নজরে আসামাত্রই ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই শৌচালয়ের গেটে আমরা তালা ঝুলিয়েছি। ঠিক কী ঘটেছে, তা-ও খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’