Fishery

‘নান্টু মডেলে’ ভেড়ি, হুমকি প্রতিবাদীদের

অনিচ্ছুক কৃষকরা প্রশাসনের কাছে নালিশ জানালে কোলাঘাট ব্লক ভূমি আধিকারিক ঘটনার তদন্তে এলাকায় যান এবং ভেড়ির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২১ ০৬:৪১
Share:

৫ থেকে ৬ ফুট উচ্চতার ভেড়ি। নিজস্ব চিত্র।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাষের জমিতে ভেড়ি তৈরির পদ্ধতিতেও বদল! মাটি খোঁড়ার বদলে রাতারাতি জমির চারপাশে বাঁধ দিয়ে সেখানে জল ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কোলাঘাটের কয়েকটি মৌজায়। যা কার্যত ভেড়ি কাণ্ডে নিহত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানের পন্থা বলে চানাচ্ছেন অনিচ্ছুক কৃষকেরা। আর এই ভেড়ি তৈরির প্রতিবাদ করায় আন্দোলনকারী নেতাদের বাড়িতে চড়াও হওয়ার অভিযোগও উঠেছে।

Advertisement

বেশ কয়েক বছর ধরে কোলাঘাট ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় চাষের জমি দখল করে ভেড়ি তৈরির অভিযোগ আসছে। কোলাঘাটের সাগরবাড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আমিরচক এবং দেউলবাড় মৌজা এলাকায় সম্প্রতি তৈরি হয়েছে চারটি ভেড়ি। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রশাসনের নজরদারি এড়াতে রাতারাতি ওই জায়গায় প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপরে ভেঙে ভেঙে ভেড়ি তৈরি করেছেন এক ভেড়ি মাফিয়া। এবার ভেড়ি তৈরির কৌশলে আনা হয়েছে বদল। অভিযোগ, ভেড়ি খননের পরিবর্তে রাতের অন্ধকারে রাতারাতি প্রস্তাবিত ভেড়ি এলাকার চারদিকে জেসিবি মেশিন দিয়ে উঁচু বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধের মাটি জমির আল খুঁড়ে বা অন্য জায়গা তেকে আনা হচ্ছে। তারপর পাম্প বসিয়ে টোপা ড্রেনেজ খালের জল জমিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার মধ্যে সাতজন ক্ষুদ্র চাষির জমি রয়েছে। তাঁদের না জানিয়েই জমি দখল করে ভেড়িটি গড়ে তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ।

উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে জনরোষে খুন হন ভগবানপুরের মহম্মদপুর-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপ প্রধান নান্টু প্রধান। ভেড়ির জন্য জোর করে চাষির জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে দিত নান্টুর লোকেরা। কোলাঘাটেও রাতারাতি বাঁধ দিয়ে জল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‘গোবিন্দচক মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি’ নামে একটি সংগঠন গড়ে এলাকার কৃষকরা ভেড়ি বিরোধী আন্দোলন শুরু করেছেন। তার জেরে টোপা-ড্রেনেজ খাল লাগোয় এলাকায় একটি ভেড়ি তৈরির উদ্যোগ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভেস্তে গিয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার অনিচ্ছুক কৃষকরা প্রশাসনের কাছে নালিশ জানালে কোলাঘাট ব্লক ভূমি আধিকারিক ঘটনার তদন্তে এলাকায় যান এবং ভেড়ির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। অভিযোগ, ভূমি আধিকারিক এলাকা ছেড়ে যাওয়ার পর ইচ্ছুক কৃষকদের একাংশ ‘গোবিন্দচক মাছের ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটি’র যুগ্ম সম্পাদক প্রশান্ত সামন্ত ও সভাপতি ভীমপদ সাঁতরার বাড়িতে চড়াও হন। প্রশান্ত বলেন, ‘‘অনিচ্ছুক কৃষকদের না জানিয়েই জমির চারদিকে বাঁধ দিয়ে জল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা যাঁরা ভেড়ির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, তাঁদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’

খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাঁধ বানানো হচ্ছে এই ভাবে।

এ বিষয়ে কোলাঘাটে বিডিও তাপস হাজরা বলেন, ‘‘এর আগে ওই এলাকায় ভেড়ি তৈরির উদ্যোগ বন্ধ করা হয়েছে। এ দিন অভিযোগ পেয়ে বিএলআরও-কে ফোন করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। উনি এলাকায় গিয়েছিলেন এবং ভেড়ির কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement