ভোজ্য তেল কারখানার সামনে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
শিল্পশহর হলদিয়ার কারখানায় ফের বিক্ষোভ। একটি বেসরকারি ভোজ্য তেল উৎপাদনকারী সংস্থার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা শুধু কর্মবিরতি পালন করলেন না, বুধবার রাতভর আটকে রাখলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র জেলা সভাপতিকে। বৃহস্পতিবার পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকের পরে শেষ হয় কর্মবিরতি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার বিকাল থেকে ওই ভোজ্য তেল উৎপাদনকারী সংস্থায় বিক্ষোভ এবং কর্মবিরতি শুরু হয়। দাবি সনদ তৈরি না হওয়া এবং বেতন সংক্রান্ত সমস্যায় বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে জানাচ্ছেন শ্রমিকেরা। এক বিক্ষোভকারীর কথায়, ‘‘চার বছর আগে দাবি সনদ হয়েছিল। সেই দাবি সনদ মতো বেতন দেওয়া হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য সেটির একটি প্রতিলিপি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার বা কারখানা কর্তৃপক্ষ দুজনই তা দিতে অস্বীকার করেন। তারপর শ্রমিকরা কর্মবিরতির দিকে পা বাড়িয়েছেন।’’
বুধবার বিকালেই আইএনটিটিইউসি’র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মাইতি শ্রমিক এবং কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে যান। অভিযোগ, তাঁকে রাতভর ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। শ্রমিকদের একাংশ অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্টে তাঁদের অভিযোগ, তাপস মাইতি শ্রমিক নেতা হলেও শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট বোঝেন না। ঠিকাদারের হয়েই কথা বলেন।
বিক্ষোভের জেরে এ দিন কারখানায় উৎপাদন সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরে আইএনটিটিইউসি-র হলদিয়ার বিশেষ পর্যবেক্ষক সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় কারখানাতে যান। টানা পাঁচ ঘণ্টা বৈঠকের পরে রফাসূত্র বেরিয়ে আসে। তুলে নেওয়া হয় কর্মবিরতি। সঞ্জয় বলেন, ‘‘কাজ বন্ধ করে কোনও আন্দোলনকে সমর্থন করে না আইএনটিটিইউসি। তবে শ্রমিক সুরক্ষা দেখা আমাদের লক্ষ্য। শ্রমিকরা তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হবেন না বুঝতে পেরেই কর্মবিরতি তুলে নিয়েছেন।’’
কারখানা সূত্রের খবর, বৈঠকে স্থির হয়েছে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে যে সমস্ত ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ হয়েছিল, তাদের বসিয়ে দেওয়া হবে। যে সমস্ত ঠিকা শ্রমিক দিনে ৩৭০ টাকা মজুরি পাচ্ছিলেন, তা বাড়িয়ে ৪৩৩ টাকা করা হবে। আর আগামী ৩ জানুয়ারি দাবি সনদ নিয়ে বৈঠক করা হবে। ভোজ্য তেল সংস্থার ডিজিএম (এইচ আর) রজতশুভ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৈঠকে শ্রমিক সমস্যার সমাধান হয়েছে। শুক্রবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন এবং উৎপাদন ফের চালু হবে।’’