রানি বিনোদমঞ্জরী রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
মাস দশেক পরে, আজ, শুক্রবার থেকে স্কুল খুলছে। আপাতত, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন হবে। করোনা-বিধি মেনে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে স্কুলগুলিকে।
সবদিক দেখে অনেক স্কুলই শ্রেণিপিছু বিভাগ (সেকশন) বাড়াচ্ছে। যেখানে কোনও শ্রেণিতে দু’টি বিভাগ ছিল, সেখানে বাড়িয়ে চারটি করা হচ্ছে। যেখানে কোনও শ্রেণিতে তিনটি বিভাগ ছিল, সেখানে বিভাগ সংখ্যা বাড়িয়ে ছ’টি করা হচ্ছে। কোনও কোনও স্কুলে একটি বেঞ্চে দু’জন পড়ুয়াকে বসানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। কোথাও আবার একটি বেঞ্চে একজন পড়ুয়াকে বসানো হবে।
করোনা- কালে কী কী বিধি মানতে হবে, আগেই স্কুলগুলিতে সেই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে স্কুল চত্বর পরিস্কার, স্যানিটাইজ করার মতো বিষয়। জানানো হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়াদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। কেন্দ্রীয়ভাবে কোনও প্রার্থনাসভা হবে না। শ্রেণিকক্ষে হতে পারে। স্কুলে আসার সময় পড়ুয়াদের দলবদ্ধভাবে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। জ্বর হলে কিংবা অন্য কারণে শরীর অসুস্থ থাকলেও স্কুলে আসা যাবে না। অভিভাবকদের ফোন নম্বরের তালিকা তৈরি রাখতে হবে স্কুলকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দার মানছেন, ‘‘স্কুলগুলি সেকশনের সংখ্যা বাড়াচ্ছে বলে জেনেছি।’’
আজ, শুক্রবার থেকে স্কুলে আসবে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসও শুরু হওয়ার কথা। অনেক স্কুলেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিভাগ সংখ্যা বাড়াতে অসুবিধা হচ্ছে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন করে রুটিনও তৈরি করছে স্কুলগুলি। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে (বালক) যেমন নবম শ্রেণির তিনটি সেকশন রয়েছে। সেখানে নবম শ্রেণির পড়ুয়া প্রায় ১৮০। প্রতিটি সেকশনে গড়ে প্রায় ৬০ জন পড়ুয়া রয়েছে। করোনা- কালে সেকশনের সংখ্যা বাড়িয়ে ছ’টি করার কথা ভাবা হয়েছে। অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে বিভাগ পিছু পড়ুয়া সংখ্যা থাকবে ৩০। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হিমানী পড়িয়া জানান, সব পড়ুয়াকে একই দিনে স্কুলে ডাকা হবে, না কি একদিন অন্তর ডাকা হবে, সে নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। কেশপুরের ঝেঁতল্যা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণপ্রসাদ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলেও শ্রেণিপিছু বিভাগ সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।’’ শালবনির মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়ার কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতির কারণে যে সব সতর্কতা মানা দরকার, মানা হচ্ছে।’’
টিফিনের সময় পড়ুয়ারা কী করবে, হস্টেলের পড়ুয়ারা কী ভাবে স্কুলে আসবে, সে সব নিয়ে অবশ্য ধন্দে রয়েছে স্কুলগুলি। আপাতত, হস্টেল বন্ধ রাখারই নির্দেশ রয়েছে। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের (বালক) প্রধান শিক্ষিকা হিমানী বলেন, ‘‘সব পড়ুয়া হস্টেলে থাকে, তারা আমার কাছে এসেছিল। হস্টেল খোলার অনুরোধ জানিয়েছে। আমি তো সরকারি অনুমোদন ছাড়া ওদের হস্টেলে থাকতে দিতে পারি না।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অবশ্য জানিয়েছেন, এখন হস্টেল বন্ধই থাকবে।