আদিবাসী নাচ। — ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল উৎসব হবে জেলা সদর মেদিনীপুরে। ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি তিনদিনের ওই উৎসব হবে শহরের কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠে। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ওই মাঠে তৈরি হচ্ছে মঞ্চ ও স্টল। সেজে উঠছে উৎসব প্রাঙ্গন ও তার আশেপাশের এলাকা।
আগে জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতেও উৎসব হত। এ বার অবশ্য ব্লকস্তরে উৎসব হচ্ছে না। শুধু জেলাস্তরেই উৎসব হবে। বিভিন্ন মহলের অনুমান, রাজ্যের কোষাগারে টান পড়েছে। তাই উৎসব আয়োজনে কাটছাঁট। এবারের উৎসবের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে জেলাস্তরে একাধিক বৈঠক হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘মেদিনীপুরে জঙ্গলমহল উৎসব হবে। জঙ্গলমহলের সংস্কৃতিকে কুর্নিশ জানাতেই এই উৎসব।’’ উদ্বোধনে থাকার কথা জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা, বিধায়ক জুন মালিয়া প্রমুখের। থাকবেন জেলার বিধায়কেরা। আদিবাসী নেতা আদিত্য কিস্কু প্রমুখেরও থাকার কথা। জানা গিয়েছে, অতিথি-তালিকা রাজ্য থেকেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিছু লোকসংস্কৃতির দল অনুষ্ঠানে অংশ নেবে।
জানা গিয়েছে, জেলাস্তরের উৎসবের জন্য এবার বরাদ্দ হয়েছে ২০ লক্ষ টাকা। ধুমধামে উৎসবের আয়োজন করতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। কোন খাতে কত খরচ করা যেতে পারে, হিসেব বুঝে এগোতে হচ্ছে তাঁদের। এ বার জঙ্গলমহল উৎসবের নবম বর্ষ। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে জঙ্গলমহল উৎসব শুরু হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক দফতর এবং পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ এই উৎসবের আয়োজন করে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি ব্লকের মধ্যে ১০টি ব্লক পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আওতায় রয়েছে। সেগুলি হল মেদিনীপুর (সদর), শালবনি, কেশপুর, গড়বেতা-১, গড়বেতা-২, গড়বেতা-৩, খড়্গপুর-১, খড়্গপুর-২, কেশিয়াড়ি এবং নারায়ণগড়। আগে জঙ্গলমহল এলাকার ব্লকগুলিতে একদিনের ব্লকস্তরের জঙ্গলমহল উৎসব হত। ব্লকস্তরের উৎসব শেষে দু’দিনের জেলাস্তরের জঙ্গলমহল উৎসব হত। জেলাস্তরের পরে রাজ্যস্তরের উৎসবও হত।
জানা গিয়েছে, এবার উৎসব প্রাঙ্গনে বিভিন্ন দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পের স্টল থাকছে। কারিগরি হাটও থাকছে। জঙ্গলমহলের হস্তশিল্পীদের সামগ্রী থাকবে সেখানে। হরেক রকম খাবারের স্টলও থাকছে। এই সময়ের মধ্যে জঙ্গলমহলে কেমন উন্নয়ন কাজ হয়েছে তা বোঝাতে উৎসব প্রাঙ্গনে নানা ধরনের প্রচারমূলক ফেস্টুন থাকার কথা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কয়েকটি লোকসংস্কৃতির দলকে ধামসা-মাদল দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মনে করিয়েছেন, ‘‘জঙ্গলমহলের উন্নয়নের সঙ্গে সাধারণ মানুষের পরিচয় ঘটানোও এই উৎসবের অন্যতম উদ্দেশ্য। উৎসবে লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে।’’