কেশপুরে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে আবার গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, মালদহের পর বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের মুকুন্দপুর গ্রামে বাড়ি পরিদর্শনের সময় কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। শুধু তালিকায় থাকা উপভোক্তাদের বাড়িই নয়, এলাকার সমস্ত বাড়ি পরিদর্শন করতে হবে— এই দাবিতে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় দলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এ নিয়ে কেন্দ্রকেই দুষেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা।
আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। যাঁরা এই প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন— বহু ক্ষেত্রেই এমন অভিযোগ ওঠার পরই রাজ্যে প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের ‘যোগ্যতা’ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে এই দল। পাশাপাশি নিয়ম মেনে বাড়ি তৈরি হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। আবাস দুর্নীতির তদন্তে বৃহস্পতিবার সকালে কেশপুরের ১৩ নম্বর অঞ্চলে যান কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। সেখানেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা।
গ্রামে গিয়ে এর আগেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের। বীরভূমের সিউড়িতে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবি ও আবাস যোজনায় বঞ্চনার অভিযোগে গত ৬ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর-১ ব্লক এলাকায় মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। বুধবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকে কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের সামনেই বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভের এই তালিকায় এ বার জুড়ল কেশপুরও।
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কেন্দ্রকেই বিঁধেছেন কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা। কেন বিক্ষোভ, তা বিশদে খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন বিধায়ক। তাঁর কথায়, আবাস যোজনায় কারা বাড়ি পাবেন, সেই নির্দেশিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শিউলি বলেন, ‘‘কারও হয়তো বাইক রয়েছে। তিনি বাড়ি পাবেন না। অথচ বাইকটি হয়তো ঋণ নিয়ে কিনেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ১৬ দফার নির্দেশিকার জেরে তিনি বাড়ি পাবেন না। কেন্দ্রের দেখা উচিত। পুনর্বিবেচনা করা হোক।’’ শিউলির পাল্টা বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় দাস বলেছেন, ‘‘আমাদের দাবি ছিল উপযুক্তরা বাড়ি পাক। প্রকৃত প্রাপকদের দাবি ন্যায্য। আমরাও চাই যোগ্যরা পাক, গরিব মানুষদের নাম নেই। সেই জন্য পরিদর্শনে এসেছে কেন্দ্রীয় দল।’’