সেই পোস্টার (বাঁ দিকে), সম্প্রতি গুড়গুড়িপালের জঙ্গলে আগুন লেগেছিল। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলে আগুন লাগলে আপনি হারাবেন আপনার উপার্জন— এমন বার্তা দেওয়া পোস্টার সাঁটানো হয়েছে মেদিনীপুর গ্রামীণের গুড়গুড়িপালের বিভিন্ন এলাকায়। সেই পোস্টার দিয়েছে স্থানীয় বন সুরক্ষা কমিটি। বুধবার সকালে ওই পোস্টার দেখা যায়।
আমাজ়নের আগুনের ক্ষত এখনও দগদগে। এর মধ্যেই আবার বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। সোমবার রাতে জলদাপাড়া জঙ্গলের মালঙ্গি বিটের তোর্সার চর লাগোয়া ঘাসবনে আগুন লেগে ছাই হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ ঘাসের জমি। বিপদে পড়েছে হরিণ, বিপন্ন প্রজাতির খরগোশ, ময়ূর। সেই প্রেক্ষিতে বন সুরক্ষা কমিটির এই পোস্টারের প্রশংসা করছেন পরিবেশ কর্মীরা।
ওই পোস্টারের উপরে লেখা, ‘জঙ্গলে আগুন লাগাবেন না’। পরে লেখা, ‘জঙ্গলে আগুন লাগানো হলে ভয়ানক বিপর্যয় নেমে আসবে জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্রে। আপনি হারাবেন আপনার উপার্জন। হিংস্র বন্য জন্তুরা প্রবেশ করবে লোকালয়ে।’ পরে আরও লেখা, ‘জঙ্গলে আগুন লাগালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ শেষে লেখা, ‘প্রচারে- গুড়গুড়িপাল বন সুরক্ষা কমিটি’। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই জঙ্গলে কাঠ, পাতা কুড়িয়ে সংসার চলে। জঙ্গল পুড়ে গেলে কাঠ, পাতা অমিল হতে পারে, সেই বার্তাই দেওয়া হয়েছে ওই পোস্টারে।
স্থানীয় উপপ্রধান অঞ্জন বেরা বলেন, ‘‘এলাকার বিভিন্ন জায়গায় এমন পোস্টার আমিও দেখেছি। বন সুরক্ষা কমিটির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এ ভাবেই তো জনসচেতনতা গড়ে ওঠে।’’ মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বেরোয়াল জানান, জঙ্গল রক্ষায় নিয়মিত প্রচারের ফলে অনেকটাই সচেতনতা গড়ে উঠেছে। আরও সচেতনতা গড়ে তোলার সব রকম চেষ্টা চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা অরূপ নন্দীর কথায়, ‘‘মানুষজন সচেতন হলেই জঙ্গল বাঁচবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।’’
ঝরাপাতার জঙ্গলে আগুন লাগানো জঙ্গলমহলের চেনা ছবি। এই সময়ের মধ্যে ওই প্রবণতা বেড়েছে। আগে যা হত মাঝে মাঝে, এখন প্রায়ই সেই ছবি দেখা যাচ্ছে। চোরাশিকারিরা এবং কাঠপাচারকারীরা এই সময়ে জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। দিন কয়েক আগে গুড়গুড়িপালের জঙ্গলেও কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। দমকল পর্যন্ত ডাকতে হয়েছিল। দমকল আসার আগেই অনেকটা জঙ্গল পুড়ে যায়।