আগাছায় ভরেছে কাঁসাই নদীর চর। নিজস্ব চিত্র।
ঠান্ডা পড়তে না পড়তেই দোকান্ডায় পা পড়তে শুরু করেছে পর্যটকদের। সপ্তাহান্তে বাড়ছে সেই ভিড়। পর্যটকদের সুবিধার্থে একাধিক পদক্ষেপ করার কথা জেলা প্রশাসনের তরফে বলা হলেও আজও হতশ্রী হয়েই পড়ে রয়েছে পাঁশকুড়ার ফুলের উপতক্যা দোকান্ডা। সরকারি উদ্যোগে পার্ক ও অতিথি নিবাস গড়ে তোলার উদ্যোগ কবে কার্যকর হবে উত্তর জানা নেই কারও। এমনকী পানীয় জল, শৌচাগারের মতো ন্যূনতম সুবিধাও গড়ে তোলা যায়নি।
পাঁশকুড়ার ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম দোকান্ডা। গ্রামের পূর্ব দিকে বইছে কংসাবতী। তারই চরে প্রায় দু'শো বিঘা জমিতে স্থানীয় চাষিরা কয়েক পুরুষ ধরে ফুলের চাষ করে আসছেন।ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত চরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জুড়ে গাঁদা, অ্যাস্টার, চন্দ্রমল্লিকা, চেরি সহ নানা ধরনের বাহারি ফুল ফোটে। দোকান্ডা আর পশ্চিম কোল্লার মধ্য দিয়ে চলে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ। পশ্চিম কোল্লা পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। রেলপথের উত্তর দিকের চরে বিঘার পর বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে চন্দ্রমল্লিকার বাগান। দোকান্ডার পশ্চিমে কিছুটা দূরে ক্ষীরাই স্টেশন। ফি বছর শীতের মরসুমে ফুলের টানে দোকান্ডায় ভিড় জমান হাজার হাজার পর্যটক। কিন্তু পর্যটকদের জন্য পানীয় জল থেকে শৌচাগার, ডাস্টবিন কিছুই নেই বলে অভিযোগ। ফলে ফুলের টানে ছুটে আসা পর্যটকদের প্রতি বছর সমস্যায় পড়তে হয়। ডাস্টবিন না থাকায় পর্যটকদের ফেলে যাওয়া থার্মোকল, পলিথিন ও মদের বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে নদীর চরে ও ফুলের জমিতে। এই নিয়ে চাষিদের আপত্তিতে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বছর দু’য়েক আগে দোকান্ডায় একটি বায়ো-ডাইভার্সিটি পার্ক তৈরিতে উদ্যোগী হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। পার্কের জন্য জমি জরিপের কাজও শেষ হয়ে যায়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়া পার্ক তৈরি নিয়ে আর কাজ এগোয়নি।
চলতি বছর জুলাই মাসে দোকান্ডায় পর্যটক নিবাস গড়ে তুলতে ভূমি দফতরের কাছে জমি চায় রাজ্য পর্যটন দফতর।প্রকল্পের জন্য ২ একর জায়গা চিহ্নিত করে পর্যটন দফতরকে জানায় ভূমি দফতর।তারপর থেকে আর কোনও উদ্যোগে নজরে পড়েনি। নভেম্বর মাসে পর্যটন দফতরের একটি প্রতিনিধি দল এলাকা পরিদর্শনে আসে। তবে এখনও ভূমি দফতরকে জমি হতান্তরের জন্য কিছুই বলা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এদিকে শীত পড়তে না পড়তেই দোকান্ডায় আসতে শুরু করেছ্ন পর্যটকরা। নদীর চর আগাছায় ভরে থাকায় এবং পানীয় জল, শৌচাগার না থাকায় বাড়ছে সমস্যা। পাঁশকুড়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর কল্যাণ রায় বলেন, ‘‘দোকান্ডায় সমস্ত ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলে আরও পর্যটক আসবে।বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। অথচ এখনও কোনও সরকারি উদ্যোগ নজরে পড়েনি।’’
পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনধুপ ভুটিয়া বলেন, ‘‘দোকান্ডায় পার্ক তৈরির কোনও খবর এই মুহূর্তে নেই।’’ বিএলআরও গৌতম সর্দার বলেন, ‘‘সম্প্রতি পর্যটন দফতরের একটি প্রতিনধি দল দোকান্ডায় এসেছিল পর্যটন নিবাসের জন্য জমি দেখতে। আমরা দু’একর জমি চিহ্নিত করে রেখেছি। ওরা চাইলেই হস্তান্তর করা হবে।’’