পরিবেশ মেলায় আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুল পড়ুয়াদের পরিবেশ-সচেতন করতে জেলায় জেলায় পরিবেশ মেলা করছে রাজ্য পরিবেশ দফতর। সোমবার ঝাড়গ্রামের অফিসার্স ক্লাব ময়দানে চত্বরে সেই মেলা শুরু হল। কিন্তু প্রথম দিনেই মেলা চত্বরে ভুজিয়া, চিপস ও কেকের প্যাকেট, পলিব্যাগ, কাগজের গ্লাস ও কমলালেবুর খোসা পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। যাঁদের সচেতন করার জন্য এই মেলার আয়োজন, সেই পড়ুয়ারাই এদিন মেলা চত্বরে ও মঞ্চের দর্শকাসনে বসার চেয়ারের চারপাশে এমন আবর্জনা ফেলেছে। এর ফলে, পরিবেশ মেলার উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এ দিন দুপুরে মঞ্চে টবে লাগানো অশোক গাছের চারায় জল দিয়ে একযোগে মেলার উদ্বোধন করেন ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস ও জেলাশাসক আয়েষা রানি। মেলা চত্বরে ২৩ টি স্টল রয়েছে। সেখানে জেলার ১০টি স্কুল যোগ দিয়েছে। জামবনি ব্লকের সেবাভারতী কলেজের ভূগোল ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগও স্টল দিয়েছে সেখানে। রয়েছে জীববৈচিত্র্য পর্ষদ ও বন বিভাগের স্টল। এ দিন স্কুল পড়ুয়াদের টিফিনে দেওয়া হয়েছিল কেক, ডিমসিদ্ধ, কমলালেবু, ভুজিয়ার প্যাকেট ও সন্দেশ। মেলা চত্বরে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকার জন্য বেশিরভাগ পড়ুয়া মেলা চত্বরে প্যাকেট, পলিব্যাগ ফেলে দেয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন কিছু পড়ুয়াকে বাইরে থেকে চিপস কিনে এনে খেতে দেখা যায়। দুপুরে লাঞ্চের প্যাকেটে ছিল ফ্রায়েড রাইস আর মুরগির মাংস। সেই খাবারের প্যাকেটে উপচে যায় ডাস্টবিন। মেলায় প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতা চলাকালীন দেখা যায়, কুকুরেরা ডাস্টবিন থেকে উচ্ছিষ্ট প্যাকেট টেনে বের করে খাচ্ছে।
ঝাড়গ্রামের পরিবেশ কর্মী অপরাজিতা ষড়ঙ্গীর অভিযোগ, ‘‘পরিবেশ মেলায় পরিবেশের কথাই ভাবা হচ্ছে না! যাদের সচেতন করার জন্য এই মেলায় নিয়ে আসা হয়েছিল, তারা তো সামান্যতম সচেতন হওয়ার শিক্ষাটাই পেল না। আয়োজকদের বিষয়টি অনেক গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত ছিল।’’ মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষকের দাবি, মেলা চত্বরে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন নেই। সাফাই কর্মীর সংখ্যা কম। তাই এই পরিস্থিতি।
মেলা দেখতে আসা মণিকা মজুমদার, সায়নিকা মণ্ডলদের ক্ষোভ, পরিবেশ মেলার মঞ্চ সাজানো হয়েছে প্ল্যাস্টিকের ফুল দিয়ে। বিষয়টি খুবই বেমানান।
মেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসার তথা ঝাড়গ্রামের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেস্ট শৈলশেখর সরকার বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখছি।’’ আজ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেলা শেষ হচ্ছে।