মুখ ঢেকেছে আবর্জনায়

কেন্দ্রীয় ‘কায়াকল্প’ প্রকল্পে পরিচ্ছন্নতার নিরিখে পুরস্কৃত রাজ্যের দু’টি হাসপাতাল। শিলিগুড়ির সঙ্গে সেখানে দ্বিতীয় নাম পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল। কিন্তু সত্যিই কি তমলুকের এই হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন? দেখল আনন্দবাজার।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৬
Share:

পরিচ্ছনতার নমুনা। হাসপাতালের মূল ভবনের সামনেই জঞ্জালে ভরেছে নালা।

ছবি এক: হাসপাতালের আউটডোরের সামনে জঞ্জাল, নিকাশি নালায় ময়লা জলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। সেখানেই দাঁড়িয়ে রোগীদের লম্বা লাইন।

Advertisement

ছবি দুই: আইসোলেশন ওয়ার্ডের সামনে জঞ্জালের স্তূপ। পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে প্লাস্টিকের চায়ের কাপ, কাগজ।

ছবি তিন: রোগীদের খাবার তৈরির রান্নাঘরের সামনে যে নিকাশি নালার গন্ধে টেকা দায়।

Advertisement

প্রত্যন্ত কোনও গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নয়। খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের সেরার পুরস্কার পাওয়া তমলুক জেলা হালপাতালের ছবিটা এমনই। হাসপাতাল চত্বরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন রোগীর পরিজনরাও।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছ ভারত মিশনের অঙ্গ হিসেবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলির অন্তর্বিভাগ ও হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার-সহ বিভিন্ন নিরিখে নম্বরের ভিত্তিতে সেরার শিরোপা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একটি পরিদর্শক দল এসেছিলে। সেই দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের মধ্যে শিলিগুড়ির হাসপাতাল প্রথম আর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে। কিন্তু বাস্তব ছবিটা একেবারে আলাদা।

জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, বহির্বিভাগের সামনে জমা জলের পাশেই রোগীদের লম্বা লাইন। আর অপরিষ্কার নিকাশিনালার পাশে বসে রয়েছেন রোগীর পরিজনরা। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের পাশে রাস্তার দু’ধারও জল-কাদায় ভর্তি, অস্বাস্থ্যকর। পানীয় জলধারের কাছে ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। হাসপাতালের মূল প্রবেশ পথের ডান দিকে রোগীর পরিজনদের থাকার যে ভবন রয়েছে, তার পিছনে আবর্জনা।

হাসপাতালের বর্হির্বিভাগের সামনে জমে রয়েছে জল-কাদা (বাঁ দিকে)। বার্ন ওয়ার্ডের পাশের নিকাশি নালা ভর্তি আগাছায় (ডান দিকে)।

হাসপাতালে রোগীদের খাবার তৈরির রান্নাঘর থেকে আইসোলেশন ওয়ার্ড পর্যন্ত নিকাশি নালায় পচা জল জমে রয়েছে। রান্নাঘরের কাছে পানীয় জলাধারের পাশেই আগাছা ভর্তি। সংক্রামক রোগীদের জন্য ওই ওয়ার্ডেরবাইরের চারপাশই সবচেয়ে সাফসুতরো থাকার কথা। কিন্তু সেই ওয়ার্ডের সামনেই প্রবেশ পথের পাশেই আবর্জনার স্তূপ। ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা তমলুকের হরিদাসপুরের এক রোগীর পরিজন স্বপন ধাড়ার ক্ষোভ, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আমাদের বোঝানো হয় বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখার জন্য। এখানে এসে দেখছি হাসপাতালের চারদিকেই নিকাশি নালায় ময়লা জল ভর্তি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তো এখানেই বেশি।’’ আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি আর এক রোগীর আত্মীয় দাসপুরের মাগুরিয়ার বাসিন্দা শ্যামসুন্দর মাইতিরও অভিযোগ, ‘‘ওয়ার্ডের বাইরে আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হবে ভাবতে পারিনি।’’

হাসপাতালের কর্মীরা জানান, জেলা হাসপাতাল চত্বরে কিছুদিন আগে এত আগাছা ও আবর্জনা জমেছিল যে তমলুক থানার সিভিক ভলান্টিয়ার বাহিনী এসে একদিনে তা পরিষ্কার করতে পারেনি। দু’ দিন ধরে সাফাইয়ের পরও এই অবস্থা। জেলা হাসপাতালের সুপার গোপাল দাসের দাবি, ‘‘হাসপাতালের ভিতরের ওয়ার্ড তো বটেই হাসপাতালের চত্বরও পরিষ্কার। নি কাশি সমস্যা মেটাতে ৪৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই কাজ হলে নিকাশি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement