—ফাইল চিত্র।
জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন ঘিরেও শাসক দল ও বিরোধী দলের টক্কর দেখল নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর।
যে জেলাকে তৃণমূলের দাপুটে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ‘গড়’ মনে করে রাজনৈতিক মহল। সেই জেলায় এবার জগদ্ধাত্রী পুজো উদ্বোধনে হাজির হলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক ভারতী ঘোষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চণ্ডীপুর ব্লকের বরজ বাজারে একটি জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন করেন ভারতী। অনুষ্ঠানে ভারতীর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা (তমলুক) সভাপতি নবারুণ নায়েক, দলের জেলা পর্যবেক্ষক অলক কুন্ডু ও জেলা সাধারণ সম্পাদক পুলককান্তি গুড়িয়া।
বরজ জগদ্ধাত্রী পুজো ও মেলা কমিটির উদ্যোগে গত ১৪ বছর ধরে চলে আসা এই জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে এ বার বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষকে নিয়ে আসা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। যদিও শাসকদলের বিধায়ক ও নেতাদের পরিবর্তে বিজেপি নেত্রীকে দিয়ে পুজোর উদ্বোধনে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখছেন না উদ্যোক্তারা।
বিজেপি সূত্রে খবর, বরজ জগদ্ধাত্রী পুজো ও মেলা কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা দলের মণ্ডল সহ সভাপতি হরিপদ নায়েক। এদিন কোনও রাজনৈতিক কথা না বললেও সাংবাদিকরা শুভেন্দুর সাম্প্রতিক বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলে ভারতী বলেন, ‘‘এটা একা শুভেন্দু অধিকারীর জিনিস নয়। এটা কোচবিহারের মিহির গোস্বামীর জিনিস, এটা মালদায় কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর জিনিস, এটা হুগলিতে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের জিনিস। তৃণমূলের ভিতরে যে ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছে এটা তার আভাস।’’ প্রসঙ্গত, শুভেন্দু ছাড়া তৃণমূলের বাকি তিন নেতাও বিভিন্ন বিষয়ে দলের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এনেছেন। এ দিন ভারতী বলেন, ‘‘আজ হয়তো শুভেন্দুবাবুকে নিয়ে আপনারা প্রশ্ন করছেন। কালকে আর একজনকে নিয়ে প্রশ্ন করবেন। সমস্যাটা কারও আসা নিয়ে নয়। সমস্যাটা হচ্ছে ওই তাসের ঘরটা কিন্তু ভেঙে গিয়েছে। যখন পুরো ঘরটা বিলীন হয়ে যাবে তখন দেখবেন দূরবীন দিয়েও আর দেখা যাচ্ছে না। কারণ ঘর আর নেই।’’
উল্লেখযোগ্য ভাবে এদিনই সন্ধ্যায় নন্দকুমারের খঞ্চি বাজারে একটি ক্লাবের জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পুজোর আয়োজকদের অন্যতম নন্দকুমার ব্লক যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি রাজু দাস শুভেন্দু অনুগামী হিসেবে পরিচিত। এদিন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শুভেন্দু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নন্দকুমারের বিধায়ক সুকুমার দে, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীননাথ দাস, জেলা পরিষদের মৎস্যপ্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর আনন্দময় আধিকারী, জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান, জেলা পরিষদ সদস্য শিবানি দে কুন্ডু।
এ দিন শুভেম্দুকেও কোনও রাজনৈতিক কথা বলতে শোনা যায়নি। পুজোর উদ্বোধন করে করোনার মোকাবিলায় পুলিশ ও আশা কর্মীদের প্রশংসা করেন শুভেম্দু। করোনা মোকাবিলায় নিজের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আপনাদের ঘরের ছেলে। শুভেন্দু গতকালও যা ছিল, আজও তাই আছে। ভবিষ্যতেও আপনাদের সেবক হিসেবে আমি কাজ করব।’’ পুজো প্রাঙ্গণে জমায়েতে ‘আমরা দাদার অনুগামী’ ব্যানার নিয়ে অনেক লোকজনকেও দেখা গিয়েছে।