আক্রান্ত সুপ্রিয়। নিজস্ব চিত্র
এক বার নয়। ভিন্ন জায়গায় দু-দু’বার যাত্রাপথে জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে মেজাজ হারিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তেজিত নেমে পড়েছিলেন গাড়ি থেকে। এবার কোলাঘাটে জয় শ্রীরাম বলার ‘অপরাধে’ বিজেপি কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে কোলা-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ছাতিনদা গ্রামে কয়েকজন বিজেপি কর্মী রূপনারায়ণের পাড়ে বসে মোবাইলে ভিডিয়ো দেখছিলেন। তাতে জয় শ্রীরাম কথাটি ছিল। তা শুনে ওই যুবকেরাও জোরে জোরে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেন। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে কাছে পিঠে থাকা কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তাঁদের উপরে চড়াও হয়। লাঠি নিয়ে ওই বিজেপি কর্মীদের ব্যাপক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। বিজেপি’র দাবি, লাঠির ঘায়ে আহত হয়েছে সুপ্রিয় পাঁজা এবং অজিত ভৌমিক তাদের দুই কর্মী। ঘটনায় তাদের অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূল নেতা নওয়াজ আলির দিকে।
মারধরেই শেষ নয়। বিজেপির অভিযোগ, শনিবার সকাল থেকে আহত বিজেপি কর্মী সুপ্রিয়কে ফোন করে হুমকিও দেন নওয়াজ। এ দিন দুপুরে তাঁর বাড়িতে নওয়াজ এবং তাঁর দলবল চড়াও হয়ে ফের লোহার রড দিয়ে সুপ্রিয়কে মারা হয় বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে সুপ্রিয়র মা শ্যামলী পাঁজাকেও দুষ্কৃতীরা মারধর করে। আহত সুপ্রিয়, শ্যামলী ও অজিতকে পাইকপাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। বিজেপি’র স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, কোলাঘাট বিট হাউস থানায় খবর দেওয়া হলেও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসতে দেরি করে। তাঁরা আপাতত কোলাঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
বিজেপি’র কোলাঘাট মণ্ডল-৩ এর সভাপতি দেবব্রত পট্টনায়েক বলেন, ‘‘পুলিশকে বারবার জানানো সত্ত্বেও তারা সময়ে ঘটনাস্থলে যায়নি। শেখ নওয়াজ তৃণমূল আশ্রিত এক দুষ্কৃতী। আমরা পুলিশকে অবিলম্বে নওয়াজকে গ্রেফতার করার আর্জি জানিয়েছি। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন রাতে কোলাঘাট বিট হাউস থানার বাইরে বেশ কিছুক্ষণ ধরে বিক্ষোভও দেখান বিজেপি’র কর্মী-সমর্থকেরা।
যদিও মারধরের ঘটনায় দলের কারও জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কোলাঘাট ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। কোলাঘাট ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। স্থানীয় কিছু বিষয় নিয়ে ওখানে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। সব ঘটনায় রাজনৈতিক রং দেখা ঠিক নয়।’’
দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছনর অভিযোগ প্রসঙ্গে কোলাঘাট বিট হাউস থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘পুলিশ দেরিতে যাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম।’’