কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাংসদ সৌমেন্দু। ছবি: সমাজ মাধ্যমের সৌজন্যে
দাদার পরে 'শাহি- সাক্ষাৎ' ছোট ভাইয়ের। সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার কিছুদিনের মধ্যেই এ বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন শুভেন্দুর ছোট ভাই তথা কাঁথির নবনির্বাচিত সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। একে 'সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ' হিসেবে দাবি করা হলেও পর পর অধিকারী বাড়ির দুই সদস্যের ‘শাহি সাক্ষাৎ’ ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলে।
বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লির নর্থ ব্লকে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন সৌমেন্দু। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে নিজের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন সৌমেন্দু। শাহের পাশে একটি চেয়ারে বসেছিলেন কাঁথির সাংসদ। তিনি লিখেছিলেন,"আমার রাজনৈতিক জীবনের অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জির অফিসে ওঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সৌভাগ্যপ্রাপ্ত হলাম। আমি ওঁর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, লোকসভা নির্বাচনে আমার লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে আসার জন্য। আমার লোকসভা কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য ওঁর বহুমূল্য পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করব।" সূত্রের খবর,কয়েকদিন ধরে লোকসভায় বাজেট অধিবেশন চলছে। সেই অধিবেশনের ফাঁকে ১ আগস্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে কয়েক মিনিটের কথোপকথন হয় সৌমেন্দুর। পারস্পরিক কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র সহ রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও সৌমেন্দুর কাছে খোঁজ খবর নেন শাহ। 'শান্তি কুঞ্জের' অভিভাবক তথা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শিশির অধিকারীর স্বাস্থ্য সম্পর্কেও খোঁজ নেন। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূল ছেড়ে অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজের 'দাদা' বলে শাহকে সম্বোধন করেছেন শুভেন্দু। তারপর তিনি যে কোনও প্রয়োজনে বহুবার শাহ-সাক্ষাৎ করেছেন। শাহের সঙ্গে শুভেন্দুর সুসম্পর্কের কথা হামেশাই শোনা যায় বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মুখে। শিশিরের ছেড়ে যাওয়া কাঁথি লোকসভা আসনে সৌমেন্দুকে দলের প্রার্থী করার পেছনে শাহের অবদান রয়েছে বলেও গেরুয়া শিবিরের অনেকে মনে করেন। সৌমেন্দুর সমর্থনে মুগবেড়িয়াতে সভাও করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কেন্দ্রের বাজেট অধিবেশন চলাকালীন সৌমেন্দুর আচমকা অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করার প্রসঙ্গে কেউ কেউ বলছেন, বঙ্গ বিজেপিতে অধিকারী পরিবারের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে চলেছে। আবার কারও ধারণা, এ বার লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে আশানুরূপ ফল করেনি বিজেপি। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি আসনে জয়ী হয়েছে পদ্ম শিবির। সে ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সম্প্রসারণ হলে শিকে ছিঁড়তে পারে সৌমেন্দুর।তবে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত প্রার্থী তথা তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বলছেন,"২০২১ সাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে সাত জায়গাতে বিজেপির বিধায়ক রয়েছেন। কোথায় কী উন্নয়ন করেছেন? রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কোথায়! মনে হচ্ছে উনি সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, দাদার মতোই বাংলাকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করতে গিয়েছিলেন।" যদিও যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে সৌমেন্দু অধিকারী বলেছেন,"নিতান্ত সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ। মিনিট কয়েক ছিলাম। অহেতুক এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে।"