—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নন্দীগ্রামে এক বিজেপি নেত্রীর বাড়ির কাছ থেকে ড্রামভর্তি তাজা বোমা উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার সকালে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। যে বিজেপি নেত্রীর বাড়ির পাশ থেকে বোমাগুলি উদ্ধার হয়েছে, সেই মামণি জানার অভিযোগ, তাঁদের বাড়িতে হামলার লক্ষ্যে বোমাগুলি জড়ো করা হয়েছিল। পাল্টা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য বিজেপির লোকজনই বোমা মজুত করেছিলেন। কয়েক দিন আগেই ওই এলাকায় এক তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। তাই রাজনৈতিক চাপানউতর তুঙ্গে উঠেছে। বোমা উদ্ধারের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
গত ৮ ডিসেম্বর তমলুক সমবায়ের ভোট গণনার দিন বিজেপি নেত্রী মামণি বোমার আঘাতে আহত হন। চিকিৎসার পরে সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন তিনি। মামণি জানান, সোমবার সকালে বোমাগুলি তাঁদের নজরে আসে। খবর পেয়ে তেখালি ফাঁড়ির পুলিশ এসে বোমাগুলিকে জলে ডুবিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছে। মামনি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের কাঞ্চননগরে সমবায়ের ভোট চলার সময় একের পর এক বোমা ছুড়ে মারা হয়েছিল আমাদের উপরে। বোমার আঘাতে আহত হয়েছিলাম আমি। আমাদের দলের আরও বেশ কয়েক জন জখম হয়েছিলেন। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে এনআইএ অ্যাক্টে এলাকার কয়েক জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাকে লাগাতার চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু হুমকিতে আমি ভয় পাইনি। মামলাও তুলিনি। সেই কারণে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে।’’
ওই বিজেপি নেত্রীর পরিবারের দাবি, রবিবার গভীর রাতে বাইকে চড়ে তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে দু’জন ঘোরাঘুরি করেছিলেন। বার বার আওয়াজ পেয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। তখন ওই দু’জন পালিয়ে যান। তার পর সকালে বাড়ির পাশে রাস্তা থেকে বোমা উদ্ধার হল। এই দুই ঘটনার যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি নেত্রীর পরিবার।
অন্য দিকে, বিজেপি নেত্রীর দাবি উড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তমলুকে সমবায় ভোটের দিন বিজেপির লোকেরাই বুথের সামনে বোমাবাজি করেছিলেন। তৃণমূল সমর্থকদের বুথে যেতে বাধা দেওয়া হয়। এখন শাসকদলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে পদ্মশিবির। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, ‘‘এক মাসের মধ্যে গোকুলনগর পঞ্চায়েত এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুই তৃণমূল কর্মীকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। এলাকা দখলে রাখতে বিজেপি রক্ত ঝরাচ্ছে। এ বার প্রচারের মুখ ঘোরাতে বিজেপি নেত্রীর বাড়ির সামনে বোমা রেখে তৃণমূলের বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, যাঁরা বোমা রেখেছিলেন, তাঁদের খোঁজ চলছে। তবে এখনও কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি।