Garbeta

ঘরছাড়া থেকে ঘরে ফেরা, সূত্র সেই মোবাইল

স্কুল পড়ুয়া বাড়ির মোবাইলটি নিয়ে পালিয়েছিল। সেই মোবাইলের লোকেশন ট্রাক করে পুলিশ জানতে পারে ছেলেটি বিহারের কোনও জায়গায় আছে।

Advertisement

নিদস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

বাবার বকুনি খেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল নাবালক ছেলেটি। বিহার থেকে দশম শ্রেণির ছাত্র সেই নাবালককে ফিরিয়ে এনে বাড়িতে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। মাধ্যম হয়ে থাকলেন ছেলের দিদি।

Advertisement

বছর ১৬ -র ওই পড়ুয়া ২২ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। দশম শ্রেণিতে পাঠরত ছেলে পড়াশোনায় ফাঁকি দিয়ে মোবাইলে মজে থাকত। যা দেখে ছেলেকে প্রচণ্ড বকুনি দিয়েছিলেন বাবা। রাগের বশে নাবালক ছেলে বাড়ি ছাড়ে। চলে যায় পাশের রাজ্য বিহারে। ছেলেকে না পেয়ে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন বাবা-সহ বাড়ির লোকজন। না পেয়ে, ২৩ তারিখ থানায় ডায়েরি করেন বাবা। তদন্তে নামে পুলিশ। অনেক জায়গায় সন্ধান চালায় পুলিশ।

ওই স্কুল পড়ুয়া বাড়ির মোবাইলটি নিয়ে পালিয়েছিল। সেই মোবাইলের লোকেশন ট্রাক করে পুলিশ জানতে পারে ছেলেটি বিহারের কোনও জায়গায় আছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, "নাবালক ছেলেটি নিজের কাছে থাকা ফোনটি কয়েকবার খুললেও, পরে কেউ যাতে ধরতে না পারে, সেজন্য সুইচড অফ করে রাখছিল। তারই মধ্যে মোবাইলের লোকেশন ট্রাকে বোঝা যায় ছেলেটি বিহারের কোথাও আছে।" এরপরই ওই নাবালককে বিহার থেকে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু করে পুলিশ। বাড়ির লোকের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারেন, ছেলেটি তার দিদিকে খুব ভালোবাসে, দিদিকে সব কথা জানাত। বিবাহিত দিদির মাধ্যমে পুলিশ বার্তা পাঠাতে থাকে নাবালকের মোবাইলে। দিদির এসএমএস পেয়ে মোবাইল খোলা রেখেছিল সে। তাতেই সফল হন পুলিশকর্মীরা।

Advertisement

পুলিশের শেখানো কথা ওই দিদি বলতেন ভাইকে। শনিবার দফায় দফায় ভাইয়ের সাথে মোবাইলে কথা বলেন দিদি। পুলিশের শিখিয়ে দেওয়া কথায় কখনও দিদি না কি বলেন - 'ভাই, বাড়ি ফিরে আয়, আমার কাছে থাকবি।' কখনও স্নেহভরা কণ্ঠে দিদি বলেন, 'ভাই তুই তো ভালো ছেলে, এরকম তো কখনও করিসনি, বাবা - মা ভেঙে পড়েছে, ফিরে আয়।' কখনও বলেন - 'তোর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে, পড়াশোনা করে বড় হতে হবে' ইত্যাদি। ওই দিদির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁর এক আত্মীয় বলেন, "পুলিশের কথা বললে ছেলেটি যদি ভয় পায়, তাই ঘুণাক্ষরেও পুলিশের কথা জানানো হয়নি তাঁকে। পুলিশ যা শিখিয়ে দিয়েছিল, তাই বলা হয়েছে মোবাইলে।"

দিদির স্নেহের কথায় রাগ ভাঙে ভাইয়ের। রবিবার সে গোপনে বিহার থেকে দিদির বাড়িতে ফিরে আসে। সোমবার সকালে খবর পেয়ে দিদির বাড়ি গিয়ে পুলিশ আটক করে বাড়ি থেকে পালানো নাবালককে। এদিনই তাঁকে গড়বেতা আদালতে তোলা হয়। আদালত নাবালক ছেলেটিকে তাঁর বাবার কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। স্বস্তি ফেরে বাড়িতে, হাঁপ ছেড়ে বাঁচে পুলিশও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement