‘কান টানলে আসবে মাথা’! 

সোমবার পুলিশ মলয় ঘোষ, নিশীথ পাল, নবারুণ মিশ্র, দীপক চক্রবর্তী এবং তসলিম আরিফ ওরফে রাজা নামে পাঁচজন গ্রেফতার করেছে। রাজা বাদে বাকি চারজনই এলাকায় কুরবান খুনের মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমানের ঘনিষ্ঠ এবং অনুগামী বলে পরিচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৫
Share:

কুরবান শা। —ফাইল চিত্র।

‘কান টানলেই আসবে মাথা’— তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের তদন্তের প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য করেছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। ওই খুনে সোমবার পাঁচ জনের গ্রেফতারের পরে কার্যত মন্ত্রীর তত্ত্বই বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে মনে করেছেন পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

সোমবার পুলিশ মলয় ঘোষ, নিশীথ পাল, নবারুণ মিশ্র, দীপক চক্রবর্তী এবং তসলিম আরিফ ওরফে রাজা নামে পাঁচজন গ্রেফতার করেছে। রাজা বাদে বাকি চারজনই এলাকায় কুরবান খুনের মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমানের ঘনিষ্ঠ এবং অনুগামী বলে পরিচিত। স্থানীয়দের অনুমান, এভাবে আনিসুর ঘনিষ্ঠদের গ্রেফতার করে পুলিশ কার্যত তাকে ‘নিঃসঙ্গ’ করে দিতে চাইছে। পরে ওই ধৃতদের ‘কান টেনে’ই হয়তো আনিসুরকে নিজেদের জালে ফেলবে পুলিশ।

উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোর নবমীতে খুন হন কুরবান। ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান-সহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে কুরবানের পরিবার। খুনের তদন্তে জেলা পুলিশের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দল সিট। পুলিশ সূত্রের খবর, সিটের তদন্তকারী আধিকারিকেরা যখন আনিসুরের খোঁজে রাজ্যে ও রাজ্যের বাইরে ছুটে বেড়াচ্ছেন, তখন পাঁশকুড়া এলাকায় আনিসুর ঘনিষ্ঠদের উপরে কড়া নজর রাখছে পুলিশ। কুরবান খুনের ঘটনায় ধৃত রাজার মঙ্গলবার টিআই প্যারেড ছিল।

Advertisement

পুলিশের একটি সূত্রের খবর, আনিসুরের সঙ্গে ধৃতদের প্রত্যক্ষ যোগ ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মাইশোরা এলাকায় একাধিক আনিসুর ঘনিষ্ঠ নেতা কুরবানের সঙ্গে প্রকাশ্যে মিল রেখে চললেও তারা আসলে ছিল আনিসুরের ‘চর’। স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের আবার অভিযোগ, রাজশহর গ্রামের তৃণমূলের এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রতিনিধি সম্প্রতি এলাকা ছাড়া হয়েছেন। অভিযোগ, ওই ব্যক্তিকে কুরবানের শোক মিছিল, স্মরণসভা ইত্যাদিতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক আগে আনিসুর ঘনিষ্ঠ এক নেতাকে আটক করার পরেই তিনি এলাকা থেকে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। বন্ধ রয়েছে তাঁর মোবাইল ফোনও। এতেই সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

এ দিকে, ধৃত নবারুণের বাবা নয়ন মিশ্র এ দিন অভিযোগ করেছেন, কুরবানের অনুগামীরা তাঁদের দোকান বন্ধে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একই অভিযোগ করেছেন এলাকা ছাড়া ওই তৃণমূল নেতার পরিবারও। নবারুণদের মাইশোরার সিমলা হাটে হার্ডঅয়্যার দোকান রয়েছে। নয়ন বলেন, ‘‘বিভিন্ন লোকমুখে শুনছি আমার দোকান বন্ধ রাখতে বলেছেন কুরবানের লোকজন। বাড়িতে আক্রমণের হুমকির কথাও শুনছি লোকমুখে।’’ আর এলাকা ছাড়া ওই তৃণমূল নেতার দাদার কথায়, ‘‘কুরবানের অনুগামীরা বাজার কমিটির সম্পাদককে বলে গিয়েছেন যে, কাল থেকে ফুলের আড়ত বন্ধ রাখতে। না হলে আড়ত ভাঙচুর করা হবে।’’

যদিও কুরবান অনুগামীদের দাবি, এলাকার মানুষ দলমত নির্বিশেষে ওই দু’জনের দোকান বন্ধ রাখার কথা বলেছেন। এটা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement