মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটক। —নিজস্ব চিত্র।
একটা সময় মাওবাদীদের ‘আতঙ্কে’ থানার দরজা বন্ধ করে ভিতরে সিঁটিয়ে থাকতে হত কর্মীদের। ২০০৯ সালের নভেম্বর থেকে মাওবাদী আন্দোলনের জেরে তটস্থ হয়ে থাকত পুলিশ। সেই লালগড় থানার বাগানে এখন ফুটছে ফুল, ফল। সেখানে এ বার মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটক। অংশ নিয়েছেন কর্মীরাই।
কালীপুজো উপলক্ষে সোমবার থানার মেজবাবু অর্থাৎ সাব ইনস্পেক্টর সৌরভ ঘোষের কাহিনি ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হল নাটক। নাম দেওয়া হয়েছে ‘যমালয়ে জীবন্ত পুলিশ’। এক জন সাব ইনস্পেক্টর, পাঁচ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর, দু’জন করে কনস্টেবল এবং সিভিক ভলান্টিয়ার, তিন জন করে হোম গার্ড এবং এনভিএফ, গাড়িচালক, স্থানীয়-সহ মোট ২০ জন অংশ নিয়েছেন নাটকে।
‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’ সিনেমায় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গিয়েছিল যমালয় থেকে ফিরতে চাইছিলেন না। এখানে সেই চরিত্র একটু আলাদা। জঙ্গলমহলের হাতির উপদ্রপ। মানুষের মৃত্যু ঘটে। তেমনই একটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে নাটকে। এক পুলিশকর্মী হাতির আক্রমণে আহত হয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। তাঁকে যমদূত মৃত বলে নিয়ে যায়। সেখানে যমরাজের ইচ্ছা, তিনি দেবরাজের জায়গা নেবেন। দেবরাজের অনুগামীরা সেই চেয়ার ছাড়তে নারাজ। চেয়ার দখলের দৃশ্য যেমন দেখানো হচ্ছে নাটকে, তেমন ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কর্মসূচিও তুলে ধরা হচ্ছে নাটকে। বাল্য বিবাহ, নারীর উন্নয়ন, কুসংস্কার, ডাইনি প্রথা, জল অপচয়ের বিষয়ও তুলে ধরা হয়েছে নাটকে।
সাব ইনস্পেক্টর সৌরভ ঘোষ জানান, দুর্গা পুজোর দু’মাস আগে থেকে শুরু হয়েছে মহড়া। বিজয়া দশমীতে জেলা পুলিশ লাইনে প্রথম মঞ্চস্থ করা হয়। পুলিশকর্মীরা কাজে ব্যস্ত থাকার পর সময় বার করে নাটকের মহড়া করেন। মুখস্থ করে মঞ্চস্থ করবেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘একটা সময় লালগড় থানার যা অবস্থা ছিল, তা এখন বদলেছে। সাধারণ মানুষ অনুষ্ঠান দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন। খুবই ভাল লাগছে সহকর্মীদের দিয়ে নাটক করাতে পেরে।’’ থানার আইসি অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। এলাকাবাসীর সঙ্গে আরও সংযোগ বাড়বে। আঁকা, আবৃত্তি, নাচের প্রতিযোগিতার আয়োজনও করা হয়েছে।’’