ঘাটাল থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের (ওসি) কোয়ার্টারে কার্তিক পুজো।
পুজোপাঠ হোক বা কোনও উৎসব। সারা রাজ্যের মানুষ যখন মেতে থাকেন আনন্দে, পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের তখন ব্যস্ত থাকতে হয় কর্তব্য পালনে। পুজোর মরসুমের শেষবেলায় কার্তিক পুজোয় দেখা গেল ঘাটাল মহকুমার সর্বোচ্চ পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের ঘরেও ব্যস্ততা। এমনটা দেখা যায়নি আগে! বৃহস্পতিবার কার্তিক পুজোয় একসঙ্গে ব্যস্ত রইলেন অনেকেই। তবে কি ফাঁক রয়ে গেল কর্তব্য পালনে? আধিকারিকদের দাবি, পুজো তো মাত্র কয়েক ঘণ্টা। দিনের বাকি সময়ে কাজ হয়েছে অন্য দিনের মতোই।
ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস, মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী, ঘাটাল থানার ওসি দেবাংশু ভৌমিক, চন্দ্রকোনা থানার ওসি রবি স্বর্ণকার এবং ক্ষীরপাই পুলিশ ফাঁড়ির আইসিও— সকলেই দিনের বেলা কাজ সেরে রাতে বাড়িতে পুজোর আয়োজন করেছেন।
প্রশাসনিক আধিকারিকদের হঠাৎ পুজোর আয়োজন কেন?
মঙ্গলবার রাতে ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে আধিকারিকদের আবাসনের দরজায় কার্তিক ঠাকুর ফেলা হয়। তারপরই শুরু হয় পুজোর ব্যস্ততা। পরিকল্পনার নেপথ্যে যে প্রশাসনিক কর্মীদের একাংশই, তা নিয়ে সন্দেহ নেই আধিকারিকদের! তবে বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কেউ বাড়তি মাথা ঘামাননি। বাড়ির সামনে কার্তিক ঠাকুর দেখেই পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা সকলেই। ওই রাতে মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী ডিউটি সরে বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর আবাসনে কার্তিক ঠাকুর বসানো। তখনই খবর ছড়ায় কার্তিক ঠাকুর পড়েছে ঘাটালের মহকুমাশাসকের আবাসনেও। পটকার শব্দ শুনে নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে এসে দেখেন, গেটের সামনে কার্তিক ঠাকুর। নিরাপত্তারক্ষীরাই খবর দেন মহকুমাশাসককে। রাতেই তিনি নেমে আসেন। নিময় মেনে ঠাকুর ঘর ঢুকিয়ে নেন। একই সময়ে ঘাটাল থানার ওসির কোয়াটার্সেও দেওয়া হয় কার্তিক। রাতেই পরপর খবর পৌঁছয় ক্ষীরপাই ফাঁড়ির আইসি থেকে চন্দ্রকোনা থানার ওসির কোয়ার্টারেও পৌঁছে গিয়েছে কার্তিকের মূর্তি।
কার্তিক পুজোয় লোকজন খাওয়ানোর রেওয়াজও রয়েছে। পুজোর প্রস্তুতির পাশাপাশি সে ব্যবস্থাও করতে হয়েছে। তবে প্রশাসনিক ও পুলিশ আধিকারিকেরা সকাল থেকে যতটা পেরেছেন সব আয়োজন করে বাকি দায়িত্ব ঘনিষ্ঠদের হাতে ছেড়ে পৌঁছেছিলেন কর্মস্থলে। কাজ শেষে ফের পুজোয় ডুব। ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “বৃহস্পতিবার অফিসে সারাক্ষণ ছিলাম। তার ফাঁকেই পুজোর প্রস্তুতি সেরেছি। দিনটা খুব ভাল ভাবেই কেটেছে।” ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, “পুজো তো রাতে হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সমানে ডিউটি করতে হয়েছে।”