৯৮ কেজিতেও র‌্যাম্পে ‘মোস্ট পপুলার’ অর্পিতা

স্থূল শরীরের কারণে হীনমন্যতায় ভোগার দিন শেষ! যেমনই হোক শারীরিক গঠন, সেটাকে ‘মেলে ধরাই’ এখন হালের ট্রেন্ড। সেই কারণেই প্লাস সাইজ মডেলরাই হলেন ফ্যাশন দুনিয়ার নয়নের মণি।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৬
Share:

অর্পিতা চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র

জিসকি বিবি মোটি, উসকা ভি বড়া নাম হ্যায়...!

Advertisement

স্থূল শরীরের কারণে হীনমন্যতায় ভোগার দিন শেষ! যেমনই হোক শারীরিক গঠন, সেটাকে ‘মেলে ধরাই’ এখন হালের ট্রেন্ড। সেই কারণেই প্লাস সাইজ মডেলরাই হলেন ফ্যাশন দুনিয়ার নয়নের মণি।

যেমন— দিল্লিতে আয়োজিত একটি প্লাস সাইজ মডেলিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন হলদিয়ার অর্পিতা চক্রবর্তী। শুধু তাই নয়, সারা দেশ থেকে নির্বাচিত মডেলদের সঙ্গে র‌্যাম্পে হেঁটে বছর সাতাশের অর্পিতা জিতে নিয়েছেন ‘মোস্ট পপুলার’ মডেলের খেতাবও। অর্পিতা জানাচ্ছেন, সমাজে মোটা চেহারার নারী এবং পুরুষদের একটু ‘অন্য’ নজরে দেখা হয়। চিরাচরিত এই ভাবনাটাকে ভেঙে ফেলতেই তিনি ‘প্লাস সাইজ মডেলিং’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলজীবন থেকেই নানা সাংস্কৃতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকতাম। নাচ-গানও বহুদিন ধরেই করছি। কিন্তু আমার শারীরিক গড়ন মোটা হওয়ায় একটু হীনমন্যতায় ভুগতাম। আসলে সমাজে মোটাদের একটু অন্য চোখে দেখা হয়। তাই ওই জায়গাটা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছিলাম।’’

Advertisement

একদিন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্লাস সাইজ মহিলাদের একটি মডেলিং প্রতিযোগিতার অনলাইন আবেদনের ফর্ম দেখতে পারেন। এর পর নাম নথিভুক্ত করতে দেরি করেননি তিনি। এর কিছুদিন পর কলকাতায় অডিশনে অংশ নেওয়ার ডাক পান অর্পিতা। তিনি বলছিলেন, ‘‘কলকাতা থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর একাই দিল্লি গিয়েছিলাম। সেখানে সারা দেশ থেকে নির্বাচিত মোট ৮০ জন মডেলকে আনা হয়েছিল। সেখান থেকেই চূড়ান্ত পর্বের জন্য ৩০ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।’’ অর্পিতা জানান, হলদিয়া থেকে দিল্লির পাঁচতারা হোটেলের র‌্যাম্পে পৌঁছনোর পিছনে তাঁর পরিবারের ভূমিকা ছিল অনেক। তাঁর স্বামী সৈকত চক্রবর্তী হলদিয়ারই একটি শিল্প সংস্থায় কাজ করেন। সৈকতের কথায়, ‘‘অর্পিতা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চাওয়ায় আমি খুব খুশি! এই বিষয়গুলি মানুষের ব্যক্তিত্বে বিকাশ এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। পুরস্কার নয়, বরং নতুন অভিজ্ঞতাই মানুষকে সমৃদ্ধ করে। ও আমাদের গর্বিত করেছে।’’

অর্পিতা জানাচ্ছেন, প্লাস সাইজ মডেলিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গেলে ওজন কমপক্ষে ৮০ কেজি ওজন হতে হবে এবং কোমরের মাপ হতে হয় অন্তত ৪৪ ইঞ্চি। তাঁর নিজের ওজন ৯৮ কিলোগ্রাম, কোমরের মাপ ৫০ ইঞ্চি। অর্পিতা বলেন, ‘‘পুজোর সময় কোনও পোশাক পরতে গেলে ভাবতে হয়— লোকে কী ভাববে! কিন্তু প্রতিযোগিতার পর বুঝেছি আত্মবিশ্বাস কাকে বলে। কী ভাবে পোশাক ক্যারি করতে হবে— সবই আমাদের গ্রুমিংয়ে শেখানো হয়েছে। ওখানে না গেলে জানতেই পারতাম না, ১৫০ কেজি ওজন নিয়েও কী ভাবে হটপ্যান্ট ক্যারি করা যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement