প্রতীকী ছবি।
পিনকন আর্থিক প্রতারণা মামলায় টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হল বৃহস্পতিবার। এদিন পাঁচ জন আমানতকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে।গত শনিবারই ওই ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার আটজনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়। রায়দানকারী ওই বিচারকেরও সম্প্রতি বদলির নির্দেশ এসেছে। তাই আমানতের টাকা ফেরত পাওয়ার খুশি থাকলেও কিছুটা হলেও মন খারাপ আমানতকারীদের।
পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত (তিন নম্বর) তথা অর্থনৈতিক অপরাধের বিশেষ আদালতের বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায় গত ৩ সেপ্টেম্বর পিনকন মামলার রায়দান করেন। এর পরেই আদালতের নির্দেশে শুরু হয় আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া। আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্দেশ্যে আগেই আদালতের হস্তক্ষেপে তমলুকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। সেই অ্যাকাউন্টে পিনকন সংস্থার বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া ২৭ লক্ষ টাকা জমা রয়েছে।
মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে পাঁচজন আমানতকারীর যাবতীয় তথ্য দিয়ে একটি বিশেষ ফর্ম জমা করা হয় ব্যাঙ্কে। বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন, আমানতকারীদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়ে ব্যাঙ্ক যেন তার প্রতিলিপি আদালতে অবশ্যই জমা করে। সেই মতো এ দিন পাঁচজন আমানতকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পিনকন থেকে তাঁদের পাওনা টাকা জমা দেয় ব্যাঙ্ক। টাকা পাঠানোর নথিও আদালতে জমা করেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার।
অর্থনৈতিক দুর্নীতি দমন শাখার সরকার পক্ষের বিশেষ আইনজীবী সৌমেনকুমার দত্ত বলেন, ‘‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচজন আমানতকারীর নথি ব্যাঙ্কে পাঠিয়েছিলাম। এ দিন ওই পাঁচজনেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। অর্থাৎ আজ থেকে প্রতারিতরা টাকা পেতে শুরু করলেন। আদালতের নির্দেশ মেনে ধাপে ধাপে সমস্ত আমানতকারীকেই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’’
বিভিন্ন ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার বিভিন্ন মামলায় রাজ্যে প্রথম পিনকলেই রায়দান হয়েছে। দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। সেই রায় দেওয়া বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায়ের রুটিন বদলির নির্দেশ এসেছে বলে তমলুক জেলা আদালত সূত্রের খবর। সরকারি আইনজীবী সৌমেন কুমার দত্ত জানিয়েছেন, আগামী ১৫ অক্টোবর বিচারক মালদা জেলা আদালতে কাজে যোগ দেবেন। বিচারকের বদলির নির্দেশে মন ভার আমানতকারীদের। খেজুরির বাসিন্দা সুখেন্দু ঘোড়াই বলেন, ‘‘ওঁর মতো বিচারক ছিলেন বলেই তিন বছরের মধ্যে আমরা বিচার পেলাম। টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। উনি বদলি হয়ে চলে যাবেন শুনে খুবই খারাপ লাগছে। উনি গরীবের প্রকৃত ভগবান।’’