ভাঙা হচ্ছে দোকান। নিজস্ব চিত্র
নিম্নচাপের বৃষ্টি আর আমবস্যার কটালের জলে বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কোলাঘাটে। জল না নামার কারণ হিসাবে বেহাল নিকাশির তত্ত্ব উঠে এসেছে সামনে। দেখা গিয়েছে, নিকাশির উপরেই তৈরির হয়েছে বিভিন্ন বেইআইনি নির্মাণ। ওই নির্মাণকারীদেরও একাংশ গত বৃহস্পতিবারের ‘বানভাসি’ পরিস্থিতির শিকার। শেষমেশ প্রশাসনের নির্দেশ এবং পরিস্থিতির গুরুত্ব ‘বুঝতে’ পেরে নিজেরাই নির্মাণ ভাঙলেন একাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পাশাপশি বড় ব্যবসায়ীরা নির্মাণ না ভাঙলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার রূপনারায়ণের জলে ভেসেছে কোলাঘাটের পুরাতন বাজার-সহ তিনটি গ্রাম। স্থানীয় সূত্রের খবর, কোলাঘাট বিবেকানন্দ মোড় থেকে ছাতিন্দা মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশে মূল দুটি নিকাশি নালা দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বেআইনি নির্মাণ। কোথাও সরকারি জায়গায় থাকা হাইড্রেনের উপরে রয়েছে বাগান, গাড়ি রাখার ঘর, আবার কোথাও রয়েছে দোকানঘর। এর ফলে ওই নিকাশি দিয়ে জল বেরোতে পারছে না বলে অভিযোগ।
নালার উপরে থাকা ওই বেআইনি নির্মাণগুলি ভাঙতে প্রশাসন একাধিকবার উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। গত বৃহস্পতিবার রূপনারায়ণের জলে বানভাসি হওয়ার পর টনক নড়ে প্রশাসনের। হুঁশ ফেরে সমস্যায় পড়া দখলদারদেরও।
তাই সম্প্রতি ফের কোলাঘাট ব্লক প্রশাসনের নির্দেশিকা পাওয়ার পরে সোমবার বিবেকানন্দ মোড়ের অন্তত ১৫ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিজেরাই তাঁদের বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলেন। অঞ্জন দাস নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘১৯৭৮ সালের পর কোলাঘাটে এরকম জলবন্দি পরস্থিতি তৈরি হল গত বৃহস্পতিবার। আমাদের নির্মাণের জন্য এলাকার নিকাশি বেহাল হোক আমরা তা চাই না। তাই আমরা নিজেরাই নিজেদের নির্মাণ ভেঙে ফেলেছি। তবে যাঁরা বড় বড় বাড়ি করে নিকাশি দখল করে বসে রয়েছেন, প্রশাসন যেন তাঁদের ছাড় না দেয়। না হলে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামব।’’
কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, মঙ্গলবার সমস্ত বেআইনি নির্মাণ প্রশাসনের উদ্যোগে ভেঙে দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। ওই কর্মসূচি ঘিরে যাতে কোনও রকম অশান্তি না হয়, সে জন্য কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন কোলাঘাট থানার কাছে পর্যাপ্ত পুলিশ চেয়ে আবেদন জানিয়েছে। এ বিষয়ে কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেকেই ড্রেন খালি করার জন্য নির্মাণ ভেঙে ফেলেছেন। যাঁরা নিজেদের উদ্যোগে অবৈধ নির্মাণ ভাঙবেন না, প্রশাসন ভেঙে দেবে। দখল খালি হওয়ার পর পূর্ত দফতর রাস্তার দু’ধারে বড় ড্রেন তৈরি করবে।’’