চিকিৎসার সঙ্গে চলল হয়রানিও

কাঁথি হাসপাতালে বহির্বিভাগ খোলা থাকলেও সেখানে চিকিৎসকরা রোগী দেখেননি। বহু রোগী ও তাঁদের পরিজনরা এদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসে হয়রান হন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০০:৩৩
Share:

বন্ধ বহির্বিভাগ। জরুরি বিভাগেই চলছে রোগীর চিকিৎসা। বুধবার তমলুক জেলা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর আক্রমণের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধের ডাক দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের আন্দোলনকে মান্যতা দিয়ে পাশে দাঁড়ান সিনিয়ররাও। আর তার জেরে বুধবার জেলার প্রায় সর্বত্রই হাসপাতলে এসে চিকিৎসা পেলেও হয়রানির হাত থেকে রেহাই মিলল না রোগী ও রোগীর পরিবারের লোকজনদের।

Advertisement

জেলা সদর তমলুকে জেলা হাসপাতালের বহিবির্ভাগ এ দিন বন্ধ ছিল। সেখানে আসা রোগীদের চিকিৎসা এ দিন করা হয় জরুরি বিভাগে। বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ পরে রোগী দেখেন। ফলে জরুরি বিভাগের সামনে রোগীদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। চার বছরের মেয়েকে নিয়ে বহির্বিভাগে এসেছিলেন নন্দকুমারের শ্রীধরপুর গ্রামের মর্জিনা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘সকালে হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখানোর জন্য ‘টিকিট’ কেটে জানতে পারি এখানে ডাক্তার রোগী দেখবে না। চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। পরে বলা হয় জরুরি বিভাগে ডাক্তার রোগী দেখবে। একটু দেরি হলেও শেষপর্যন্ত শিশু বিভাগের ডাক্তার দেখাতে পেরেছি।’’ হাসপাতালের চিকিৎসক যুগলচন্দ্র মাইতি বলেন,‘’এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসকের উপর আক্রমণের ঘটনা অতি নিন্দনীয়। তার প্রতিবাদ জানাতে আজ বহির্বিভাগে পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে রোগীদের যাতে না অসুবিধা হয় সেজন্য আমরা ‘কালোব্যাজ’ পরে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি বহির্বিভাগে আসা সব রোগীদের চিকিৎসা করেছি।’’ হাসপাতালের সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘এনআরএস হাসপাতালের ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বহির্বিভাগের পরিষেবা বন্ধ ছিল। তবে জরুরি বিভাগে অতিরিক্ত চিকিৎসক রেখে পরিষেবা চালু রাখা হয়। সেখানে বহির্বিভাগের রোগীদেরও চিকিৎসা করা হয়েছে।’’

কাঁথি হাসপাতালে বহির্বিভাগ খোলা থাকলেও সেখানে চিকিৎসকরা রোগী দেখেননি। বহু রোগী ও তাঁদের পরিজনরা এদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসে হয়রান হন বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য জরুরি বিভাগে বসে রোগী দেখেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে কোনো রকম অসুবিধে হয়নি। চিকিৎসকরা পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন।’’

Advertisement

এদিন পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগ খোলা থাকলেও চিকিৎসকরা কেউই সেখানে রোগী দেখবেন না বলে জানিয়ে দেন হাসপাতাল সুপারকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ রজক নিজে এবং আর এক জন চিকিৎসক বহির্বিভাগে রোগী দেখতে শুরু করেন। সুপার বলেন, ‘‘এনআরএসের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন বহির্বিভাগে চিকিৎসকেরা রোগী দেখবেন না বলে জানিয়ে দেন। তাই নিজেই রোগী দেখতে শুরু করি।’’

হলদিয়া মহকুমা হাসাপাতালে এ দিন বহির্বিভাগে কয়েক জন চিকিৎসক অনুপস্থিত ছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। রোগীর ভিড় সামাল দিতে সুপার নিজে দেখেন।

এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এ দিন বহির্বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement