গত বছরের একটি ধান কেনার শিবিরে। ফাইল চিত্র
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বরের শুরু থেকেই ফের সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হবে। ইতিমধ্যেই মাঠ থেকে ধান ওঠা শুরু হয়েছে। তবে গতবার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সে বার জেলায় আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। এ বারও লক্ষ্যমাত্রা একই রাখা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর।
তবে গত বারের মতো এ বারও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে এখন থেকেই সংশয় দেখা দিয়েছে। জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলছেন, ‘‘গতবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছু পরিমাণ কম ধান কেনা হয়েছিল।’’ এ বার একই লক্ষ্যমাত্রা রাখা হল কেন? অমূল্যের জবাব, ‘‘সব দিক দেখেশুনেই লক্ষ্যমাত্রা এক রাখা হয়েছে। এ বার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সব রকম চেষ্টা হবে। আমরা নিশ্চিত, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবেই! যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে মেদিনীপুরে একটি বৈঠক করা হয়েছে। ওই বৈঠকে ধান কেনার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির পাশাপাশি বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলার খাদ্য নিয়ামক সুকোমল পণ্ডিত প্রমুখ। সূত্রে খবর— বৈঠকে স্থির হয়েছে, এ বার কিছু স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজে নিযুক্ত করা হবে। আপাতত তৈরি হচ্ছে সেই তালিকা। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ওই তালিকা জেলায় জমা পড়বে।
ধন-ধান্যে
২০১৭- ’১৮
লক্ষ্যমাত্রা- ২,১০,০০০
কেনা- ১,৯৯,৩৯৯
উপকৃত কৃষক- ৩২,২০৩
২০১৮- ’১৯
লক্ষ্যমাত্রা- ২,৫০,০০০
কেনা- ২,২৫,৯২৭
উপকৃত কৃষক- ৮০,৯২৯
২০১৯- ’২০
লক্ষ্যমাত্রা- ২,৫০,০০০
কেনা- ?
উপকৃত কৃষক- ?
গতবার পশ্চিম মেদিনীপুরে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন। খাদ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত দু’লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা সম্ভব হয়েছে। শুরুর দিকে ধান কেনার গতি ছিল ধীর। পরে গতি বাড়ানো হয়। ওই সূত্রের দাবি, গতবার জেলার ৮০ হাজার কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হয়েছে। এ বার জেলায় ধানের ফলন মন্দ হয়নি। স্বাভাবিক উৎপাদন হবে বলেই আশা! কত উৎপাদন হতে পারে? প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সাড়ে চার লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে। বস্তুত, জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়, তার সবটা কখনও সরকারি উদ্যোগে কেনা সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত, সরকার তা কেনেও না।
খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘শিবির করে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হলে খোলা বাজারে ধানের দামে সেই ভাবে প্রভাব পড়ে না। ফলে, কৃষকেরা ন্যায্য মূল্য পান। অন্তত ধান বিক্রি করে কৃষকদের ক্ষতির মুখ দেখতে হয় না।’’